চলে গেলেন এশিয়াডে সোনা জেতা মহাভারতের ভীম
জীবনে যাতে হাত দিয়েছেন তাতেই তিনি সফল হয়েছেন। সোনা ফলিয়েছেন। সেই মহাভারতের ভীম আর নেই। ৭৪-এ শেষ হল মহাবলীর জীবন।
৭৪ বছরে চলে গেলেন দেশের সোনার ছেলে মহাবলী ভীম প্রবীণ কুমার সোবতি। একটু অসুবিধা হচ্ছে চিনতে? মনে হচ্ছে কি এ আবার কে? তাঁর পরিচয়টা একটু বিস্তারিতভাবে দিলে কিন্তু সকলেই বলবেন, তাই! ওনার নাম প্রবীণ কুমার সোবতি ছিল?
উচ্চতা ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি। তাঁর পাশে দাঁড়ালে অধিকাংশ ভারতীয়কে লিলিপুট বলে মনে হত। শুধু উচ্চতা নয়, তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সুঠাম পেশীবহুল চেহারা। এমন এক চেহারার অধিকারী যে সহজেই সেনায় সুযোগ পাবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
তিনি জীবন শুরু করেন বিএসএফ-এ চাকরি দিয়ে। তবে এখানেই জীবন শেষ হয়নি তাঁর। তিনি ছিলেন দেশের উজ্জ্বলতম এক অ্যাথলিট।
ডিসকাস থ্রো এবং হ্যামার থ্রো, এই ২ বিভাগে তিনি ছিলেন দেশের সেরা। ভারতের হয়ে ১৯৬৬ সালে জামাইকায় হওয়া কমনওয়েলথ গেমসে যোগ দেন তিনি। ওই বছরই তিনি ভারতের হয়ে যান এশিয়ান গেমসে।
ওই এশিয়াডে একটি সোনা ও একটি ব্রোঞ্জ পদক জেতেন তিনি। ১৯৭০-এ ফের দেশের হয়ে এশিয়ান গেমসে পা। ফের সোনা জেতেন তিনি।
১৯৭৪ সালে তেহরান এশিয়াড থেকে দেশকে এনে দেন রূপোর পদক। এছাড়া ১৯৬৮ ও ১৯৭২ সালের অলিম্পিকসেও ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। দেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়াবিদ ছিলেন তিনি। কিন্তু তখনও ক্রীড়া জগতের বাইরে তাঁকে সবাই চিনতেন এমনটা নয়।
তাঁকে পরিচিতি দেয় আশির দশকে ভারতীয় টেলিভিশন জগতে আলোড়ন ফেলা বিআর চোপড়ার মহাভারত। যেখানে তিনি পাণ্ডবদের মেজভাই মহাবলী ভীমের চরিত্রে অভিনয় করেন।
ভারতের হয়ে ক্রীড়া জগতে সোনা জিতে আনা প্রবীণ রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে যান ভীমের চরিত্রে অভিনয় করে। এরপর কমিকস চরিত্র চাচা চৌধুরির কাছে থাকা বৃহস্পতি গ্রহ থেকে আসা মহাবলী সাবুর ভূমিকাতেও সিরিয়ালে তিনি পারদর্শিতার পরিচয় দেন।
সেখানেও তিনি ছোটদের তো বটেই, এমনকি সব বয়সের মানুষের মনে জায়গা পান। সেই মানুষটা চলে গেলেন ৭৪ বছর বয়সে। দিল্লিতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা