মঙ্গলবার সকালে বিধান ভবন, হাইকোর্ট, রানি ভবানী রোডের বাড়ি হয়ে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির মরদেহ বিকেল ৩টে নাগাদ বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে দমদম বিমানবন্দর থেকে পাড়ি দেয় রায়গঞ্জে। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী, পুত্র। অন্য একটি চপারে বেহালা ফ্লাইং ক্লাব থেকে রায়গঞ্জের দিকে উড়ে যান অধীররঞ্জন চৌধুরী সহ প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ ঘরের ছেলে প্রিয়রঞ্জনের নিথর দেহ নিয়ে কপ্টার নামে রায়গঞ্জের হেলিপ্যাডে। বাইরে তখন থিকথিক করছে মানুষের ভিড়। দলমত নির্বিশেষে তাঁদের ‘প্রিয়দা’কে শেষ দেখা দেখতে ভিড় সামলানো তখন দায়। এখানেই পুলিশ ট্রেনিং গ্রাউন্ডে রাজ্য সরকারের তরফে প্রয়াত নেতাকে গান স্যালুট দেওয়া হয়। তারপর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হল কালিয়াগঞ্জ। কালিয়াগঞ্জ পৌঁছতে পৌঁছতে সন্ধে। কিন্তু তখনও তাঁর যাত্রাপথ থেকে বাড়ির চারপাশ লোকে লোকারণ্য। কালিয়াগঞ্জে তাঁর পৈতৃক বাড়িতে বেশ কিছুক্ষণ রাখা হয় দেহ। এখানেই ২০০৮ সালে দুর্গাপুজোর সময়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। বাড়ি থেকে তাঁকে দিল্লি এইমসে নিয়ে যাওয়া হলেও কোমায় চলে যান প্রিয়রঞ্জন। তারপর আর কখনও উঠে দাঁড়াননি। কথা বলেননি। আসেননি কালিয়াগঞ্জ।
৯ বছরের অপেক্ষার শেষে মঙ্গলবার ফের নিজের বাড়ির চৌকাঠে ফিরে এলেন বটে। তবে নিথর দেহে। কফিনবন্দি হয়ে। চোখের জলে তখন ভাসছে গোটা কালিয়াগঞ্জ। হোক কোমায়। তবু মানুষটা তো ছিল। কিন্তু আজ আর তাদের প্রিয় মানুষটা নেই, এটা যেন মন থেকে মেনে নিতে পারছিল না কালিয়াগঞ্জ। বাড়িতে কিছুক্ষণ মরদেহ রাখার পর সেখান থেকে কালিয়াগঞ্জ কংগ্রেস পার্টি অফিস। যে পার্টি অফিসের সঙ্গে প্রিয়রঞ্জনের জীবনের বহু স্মৃতি জড়িয়ে আছে। সেখান থেকে ফের রায়গঞ্জে ফেরা। রায়গঞ্জের কংগ্রেস পার্টি অফিসে শায়িত রাখা হয় দেহ। কিছুক্ষণের অপেক্ষা। তারপর সেখান থেকে সোজা রায়গঞ্জ বন্দর শ্মশান। এখানেই রাতে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।