দুর্গাপুজো মানেই প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে ঠাকুর দেখা। সকলেই নিজের মত করে সাজিয়ে নেন পুজোর দিনগুলোয় কীভাবে ঘুরবেন শহরটাকে। আমাদের তরফ থেকেও রইল একটি পথ নির্দেশিকা। ঠাকুর দেখার পথ নির্দেশ। পুজোয় কেউ ঘোরেন গাড়িতে, কেউ ট্রাম-বাস-অটোয়। কেউবা স্রেফ পায়ে হেঁটে। তাই আমরা কোনও যানবাহনের নাম দিচ্ছি না। কেবল কার পরে কোন ঠাকুর দেখতে পারেন বা একই অঞ্চলে কটা ঠাকুর দেখতে পারেন, তার একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করছি মাত্র।
উত্তর কলকাতা বললেই যে জায়গাটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে তা হল শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়। তাই সেখান থেকেই শুরু হোক যাত্রা। শ্যামবাজার থেকে বিটি রোডের দিকে একটু এগোলেই টালা পোস্ট অফিস। পাশেই টালা ব্রিজ। তারই তলায় একদিকে টালা বারোয়ারি। অন্যতম সেরা পুজোর একটা। ওটা দেখে চলে যান তার ঠিক উল্টো পারে। টালা ফ্রেন্ডস অ্যাসোসিয়েশনের পুজো দেখে খাল ধারের গ্যালিফ স্ট্রিট ধরে এগিয়ে প্রথম ক্রসিং থেকে বাঁ দিকে বেঁকলেই বাগবাজার মোড়। চলে যান বাগবাজার সার্বজনীনের পুজো দেখতে। পুরনো ও নামকরা পুজো। দেখে বেরিয়ে বাগবাজার মোড়ে ফিরে এবার গন্তব্য রাজবল্লভপাড়া। এখানেই রাস্তার ওপর জগৎ মুখার্জী পার্ক। এই পুজো ২ বছর আগেও তেমন লাইমলাইটে আসেনি। কিন্তু এবার ভিড় যে উপচে পড়বে তা আগে থেকেই অনুমেয়। এখান থেকে বেরিয়ে পাশের রাস্তা ধরে পৌঁছে যান কুমোরটুলি। এখানে ২টি পুজো রীতিমত নজরকাড়া। কুমারটুলি সর্বজনীন ও কুমারটুলি পার্ক। এই ২টি পুজো দেখা শেষ করে এখান থেকে চলে আসুন রবীন্দ্র সরণি ও বি কে পাল অ্যাভিনিউয়ের ক্রসিংয়ে। এখানে শোভাবাজার বেনিয়াটোলা সর্বজনীনের পুজো দেখে বি কে পাল হয়ে পৌঁছে যান আহিরীটোলা সার্বজনীনের পুজো দেখতে। আহিরীটোলা দেখে বিডন স্ট্রিট ধরুন। পৌঁছে যান পাথুরিয়াঘাটা পাঁচের পল্লির পুজো মণ্ডপে। তারপর সেখান থেকে সোজা চলে যান হেদুয়া মোড়ে। সেখান থেকে ট্রাম লাইন ধরে বাঁদিকে কিছুটা এগোলেই কাশী বোস লেনের পুজো। এখানে প্রতিমা দর্শন করে সোজা চলে আসুন হাতিবাগান মোড়ে। দেখুন হাতিবাগান সর্বজনীন। সেখান থেকে শ্যামবাজারমুখী ট্রামলাইন ধরে পৌঁছে যান সিকদার বাগানের পুজোয়। সিকদার বাগান দেখে হাতিবাগান নবীন পল্লীর পুজো মণ্ডপে পৌঁছে যান। পাশেই হওয়ায় চিনতে অসুবিধা হবে না। তারপর সেখান থেকে একটু এগিয়ে দেখুন নলিন সরকার স্ট্রীটের পুজো। চিনতে অসুবিধা হলে কাউকে একটু জিজ্ঞেস করে নেবেন। তাতে অযথা গলির মধ্যে ঘুরপাক খাওয়ার ভয়টা থাকে না। সময়টাও বাঁচে। নলিন সরকার স্ট্রীট দেখে খান্না মোড় পার করে উল্টোডাঙার দিকে একটু এগোলেই ব্রিজের নিচে পড়বে গৌরীবেড়িয়া বা গৌরীবাড়ির পুজো। সেটা দেখে ব্রিজ পার করে পৌঁছে যান করবাগানে। করবাগান দেখে চলে যান উল্টোডাঙ্গা যুববৃন্দের পুজোয়। তারপর উল্টোডাঙার দিকে আরও এগিয়ে পৌঁছে যান তেলেঙ্গাবাগানের পুজোয়। দেখুন উল্টোপারের কবিরাজবাগানের পুজোও। কবিরাজবাগান দেখে উল্টোডাঙা মোড় থেকে বাঁদিকে কাজী নজরুল ইসলাম সরণি (ভিআইপি রোড) ধরে সোজা পৌঁছে যান দমদম পার্ক। ওখানে দমদম পার্ক তরুণ সংঘ, দমদম পার্ক তরুণ দল, দমদম পার্ক ভারত চক্র ও দমদম পার্ক সর্বজনীন। ৪টিই ভাল পুজো। এগুলি দেখে ফিরে আসুন ভিআইপিতে। তারপর লেকটাউন। লেকটাউনে ঢুকে দেখুন অধিবাসীবৃন্দের পুজো। তারপর সেখান থেকে বেরিয়ে আসুন ফের ভিআইপিতে। উল্টোডাঙার দিকে এগোলে পড়বে শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের পুজো।
এটা দেখে মোটামুটি এখানেই শেষ করা যেতে পারে এদিনের পুজো দেখা। তবে যদি মনে হয় এতগুলো পুজো একদিনে সম্ভব নয় তাহলে নিজের বাড়ি বা সুবিধামত ভেঙে নিতে পারেন রুটম্যাপ। আর যদি চান আরও পুজো দেখে নিতে। তবে আমাদের পরদিনের প্ল্যানের রুটটা ফলো করে এগিয়ে যেতে পারেন।