অসুর মানে এক ভয়ংকররূপী ব্যক্তি নন, যাঁকে মা দুর্গা ত্রিশূলে বিদ্ধ করছেন। আমাদের সমাজের যাবতীয় অপরাধ, অন্ধকার দিকই আসলে অসুর। আর সেই অসুরের মুখোশ প্রতিনিয়ত খুলে দিচ্ছে সংবাদমাধ্যম। দেখিয়ে দিচ্ছে তরোয়ালের মত মারণাস্ত্রের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী কলমের খোঁচা। কমলই আসলে মোক্ষমাস্ত্র। খবরের মধ্যে উন্মোচিত সত্য একের পর এক অপরাধের মুখোশ খুলে দেয়। সিঁথির ভোরের আলো সংঘের এবারের থিম মোক্ষমাস্ত্র। এটাই তাদের বিষয় ভাবনা। দেবীর হাতে রয়েছে ঝর্না কলম। ২ হাতে ঝর্না কলম দিয়ে বিদ্ধ করছেন খুন, রাহাজানি, ধর্ষণ, কালোবাজারি, ঘুষকাণ্ডের মত একের পর অপরাধকে। এসব অপরাধকে এক একটি খুলির আকারে এখানে প্রকাশ করার চেষ্টা হয়েছে। এক একটি খুলির মাথায় লেখা এক একটি অপরাধ। আর সেই অপরাধে খুলির ঢিবির ওপর দাঁড়িয়ে দেবী তাঁর হাতের কলমে বিদ্ধ করছেন অপরাধগুলিকে। দেবীর হাতে রয়েছে সংবাদমাধ্যমে ব্যবহৃত জিনিসপত্র।
মণ্ডপ সেজে উঠেছে একটি আগ্নেয়গিরির আদলে। যা আসলে খবরের আগ্নেয়গিরি। লাভাস্রোত হয়ে গড়িয়ে পড়ছে খবর। মণ্ডপের ভিতরটা সেজে উঠেছে শিকড়-বাকড়, মৌচাকে। আর রয়েছে প্রচুর ইন্সটলেশন। যারমধ্যে রয়েছে স্যাটেলাইট, ডিশ, পেনড্রাইভ থেকে শুরু করে পেন, মোবাইল, সিডি, কম্পিউটার সহ আরও নানা জিনিস। কিছু লেপ্টে আছে পাহাড়ের গায়ে। কিছু ঝুলছে শিকড়ে। মণ্ডপের মাঝখানে একটি অর্ধাকার পৃথিবী। গুহায় প্রবেশ পথেও রয়েছে বেশ চমক। রয়েছে সামঞ্জস্য রেখে আবহ সঙ্গীত। এছাড়া মণ্ডপ পর্যন্ত পৌঁছনোর হাঁটাপথে বেজে চলেছে বিষয় ভাবনাকে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরে একটি সুর ও শব্দের মেলবন্ধন। সব মিলিয়ে একেবারে ভিন্ন বিষয় ভাবনায় সেজে উঠেছে এবারের সিঁথি ভোরের আলো সংঘের দুর্গাপুজো।