জনবহুল এলাকা হিসাবে উত্তর কলকাতার হাতিবাগানের সুনাম আছে। শ্যামবাজার-হাতিবাগান মানেই উত্তর কলকাতার অন্যতম বাণিজ্যস্থল। যেখানে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সারি সারি দোকান পসরা সাজিয়ে বসে। বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ভিড় জমান কেনাকাটা সারতে। পুরনো কলকাতার এই জনবহুল এলাকায় ১৯৩৪ সালে শুরু হয় হাতিবাগান সর্বজনীন দুর্গাপুজো। স্বাধীনতা পূর্ব কলকাতার মধ্যবিত্ত পাড়ায় পুজো শুরু করেন পাড়ার কিছু উৎসাহী মানুষ। ছোট করেই শুরু। তবে পুজো চলেছে নিরবচ্ছিন্নভাবে। এবার হাতিবাগান সর্বজনীন পা রাখল ৮৩ তম বর্ষে। গুটি গুটি পায়ে অনেকগুলো বছর পার করে হাতিবাগান সর্বজনীনের পুজো কিন্তু এখন উত্তর কলকাতার নজরকাড়া পুজোগুলোর অন্যতম।
প্রায় হাতিবাগান মোড়ের কাছে হওয়ায় প্রতিবছরই প্রচুর মানুষের ভিড় জমে এখানে। সাদামাটা পুজোটি ১৯৯৭ সালে বদলে যায় থিমের পুজোয়। তারপর থেকে প্রতিবছরই নতুন নতুন ভাবনার চমক থাকে হাতিবাগানের পুজোয়। প্রিন্সিপাল ক্ষুদিরাম বোস স্ট্রিটের এই পুজো অপরিসর রাস্তার ওপর। কিন্তু তারমধ্যেই মনকাড়া সুন্দর ভাবনাকে তুলে ধরায় খামতি রাখেননা পুজোর উদ্যোক্তারা।
এবছর হাতিবাগানের থিম ‘উড়ান’। খাঁচা ছেড়ে প্রকৃতির বুকে ডানা মেলা সেই উড়ান এবার রূপ পেতে চলেছে বেনারসের লোকশিল্পীদের হাত ধরে। তাঁদের তৈরি কাঠের পাখিতে ভরে উঠছে হাতিবাগান সর্বজনীনের এবারের মণ্ডপ। থিম শিল্পী দেবজ্যোতি জানা। থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই রূপ পাচ্ছে প্রতিমা। প্রতিমাশিল্পী সৌমেন পাল। বিখ্যাত সুরকার জয় সরকার এবার হাতিবাগান সর্বজনীনের থিম সং সৃষ্টি করছেন। যারসঙ্গে খাপ খাবে উড়ানের ভাবনা।
হাতিবাগানের এবারের পুজোর বাজেট আনুমানিক ২৫ লক্ষ টাকা। উদ্বোধন তৃতীয়ার দিন। প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে বলে আশা করছেন পুজোর উদ্যোক্তারা।