ম্যাডক্স স্কোয়ারের দুর্গাপুজো। কলকাতায় যত দুর্গাপুজো হয় সেগুলির থেকে কোথাও একদম আলাদা এই পুজোর আনন্দ। বাঙালির পুজোর কফি হাউস বললে কথাটা বোধহয় খুব ভুল বলা হয়না। উত্তর কলকাতা থেকেও তরুণ তরুণীর দল ম্যাডক্স স্কোয়ারের পুজো প্রাঙ্গণে একদিনের জন্য হলেও দেখা করেন। ঠাকুর দেখা বা প্যান্ডেল দেখাটা সেক্ষেত্রে কিন্তু মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। মুখ্য হল ম্যাডক্স স্কোয়ারের বিশাল প্রাঙ্গণে বসে নিখাদ আড্ডা আর জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া। পুজোর সময় দিনভর কত যে গ্রুপ বিভিন্ন জায়গায় বসে নিজেদের মধ্যে হৈচৈ হুল্লোড়ে মেতে ওঠে তার হিসেব দেওয়া কঠিন। আর এখানেই ম্যাডক্স স্কোয়ার নিজের জায়গায় মৌলিক।
সনাতনি গঠনে নির্মিত ম্যাডক্স স্কোয়ার-এ দুর্গাপুজোর সূচনা রিচি রোডের পল্লীবাসীদের উদ্যোগে ১৯৩৬ সালে। ৪ বছর পরে এই পুজো ম্যাডক্স স্কোয়ারে আয়োজিত হতে শুরু করে। তখন থেকে এই পুজো চলে আসছে নিজের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে। ম্যাডক্স স্কোয়ারের পুজোয় প্রতিমা দেখার মত। টানা টানা বড় বড় চোখ, ঝলমলে বেশভূষায় সাবেকি প্রতিমা। বৃহৎ আকারের প্রতিমা হওয়ায় তৈরি হয় ট্রলির ওপর। প্রতিমাশিল্পী তরুণ পাল।
এ পুজোর উদ্যোক্তারা বড় একটা থিম পুজোর ধার ধারেননা। বরং বনেদিয়ানায় অধিক বিশ্বাসী তাঁরা। এবার মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে একটি রাজবাড়ির আদলে। কাপড়, বাঁশ, শালখুঁটি দিয়ে তৈরি হচ্ছে মণ্ডপ। থাকছে প্রচুর আলো। মাঠ জুড়ে মেলা মেলা একটা আবহ তো থাকছেই। যেহেতু বনেদিয়ানাই এই পুজোর বড় সম্পদ, তাই এখানে থিম সং তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই থিম সং নেই।
ম্যাডক্স স্কোয়ারের এবারের পুজোর বাজেট আনুমানিক ৬৫ লক্ষ টাকা। পুজোর দিনগুলোয় দৈনিক ১ লক্ষের ওপর দর্শক আশা করছেন উদ্যোক্তারা।