দমদম পার্ক সর্বজনীনের এবারের থিম গৌতম বুদ্ধের অহিংসা। পুরনো পুজো। চেনা নাম। যাঁরা প্যান্ডেলে ঘুরে পুজো উপভোগ করেন তাঁদের কাছে তো বটেই। এমনকি যাঁরা বিশেষ প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে না ঘুরে পাড়ায় বা আবাসনে সময় কাটান, অথবা টিভিতে পরিক্রমায় চোখ রাখেন, তাঁদের কাছেও দমদম পার্ক সর্বজনীন একডাকে চেনা। ১৯৫১ সালে শুরু হওয়া এই পুজো এবার ৬৭ তম বর্ষে পা দিল। পূর্ববঙ্গ থেকে বহু মানুষ একসময়ে কলকাতায় চলে আসেন। সে ইতিহাস সকলের জানা। তাঁদের অনেকে এই অঞ্চলে একসঙ্গে বসবাস শুরু করেন। সেই কৃষ্ণপুর কো-অপারেটিভ সোসাইটির উদ্যোগেই শুরু হয় পুজো। তারপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পুজো বড় হয়েছে। ভাবনায় বৈচিত্র্য এসেছে। দমদম কালীমন্দির সংলগ্ন মাঠের এই পুজো এখন কলকাতার অন্যতম সেরা পুজোর তালিকায় নাম তুলে নিয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের অহিংসার কথা প্রচার এবার ফুটে উঠছে দমদম পার্কের প্যান্ডেলে। শিল্পী বিভাস মুখোপাধ্যায়ের প্যান্ডেল ভাবনায় মিশে গিয়েছে জাপান থেকে বিষ্ণুপুর। একদিকে যেমন বিষ্ণুপুরের বিখ্যাত মাটির হাঁড়ি দিয়ে সেজে উঠছে প্যান্ডেল, তেমনই তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে যুক্ত হচ্ছে জাপানের জনপ্রিয় শিল্প ওরিগামির একটি ধরণ কিরিগেমি শিল্প। আর থাকছে ঘড়ি। গোটা মণ্ডপ জুড়ে ব্যবহার হচ্ছে শতাধিক হাতঘড়ি। বাকিটুকু না হয় দর্শনার্থীরা নিজেরাই দেখবেন।
প্যান্ডেলের অভিনবত্বের সঙ্গে খাপ খাইয়ে প্রতিমাতেও থাকছে চমক। প্রতিমা হচ্ছে ত্রিমাত্রিক। সাধারণত প্রতিমার পিঠের দিকটা ফাঁকা থাকে। কিন্তু এখানে তেমনটা হচ্ছে না। প্রতিমাশিল্পী সুবল গিরি একদম অন্য ভাবনায় প্রতিমার পিঠের দিকেও কাজ রাখছেন। সবকিছুর সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে থাকছে থিম সং-ও। থিম সং সৃষ্টি করছেন পণ্ডিত মল্লার ঘোষ।
দমদম পার্ক সর্বজনীনের এবারের বাজেট আনুমানিক ৩০ লক্ষ টাকা। পুজোর উদ্বোধন তৃতীয়ার দিন। ফলে হাতে অনেকগুলো দিনই থাকছে দর্শনার্থীদের জন্য। প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হবে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা।