
ষাটের দশকে কলকাতার বহু বারোয়ারিরই পথচলা শুরু। সেই তালিকায় ছিল তেলেঙ্গাবাগানের পুজোও। উল্টোডাঙা সর্বজনীন নামে যে পুজোটি হত, সেটি ১৯৬৩ সালে বন্ধ হয়ে যায়। তার পরের বছর পুজো হয়নি। সেই পুজোটিই ১৯৬৫ সাল থেকে তেলেঙ্গাবাগান সর্বজনীন পুজো নামে ফের চালু করা হয়। সেই তেলেঙ্গাবাগানের পুজোর সূত্রপাত। স্থানীয় বাসিন্দারাই এই পুজোর সূচনা করেন।
শুরুতে তেমন নামকরা পুজোর তালিকায় না পড়লেও নব্বইয়ের দশকে এশিয়ান পেন্টস শারদ সম্মানে ভূষিত হয় তেলেঙ্গাবাগানের পুজো। অপরিসর গলিতেও থিমের অভিনবত্বে তাক লাগিয়ে দেন উদ্যোক্তারা। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রতি বছরই নতুন নতুন ভাবনা দর্শকদের মন জয় করেছে। ভিড় বেড়েছে উল্টোডাঙা থেকে অনতিদূরের এই পুজোমণ্ডপে। এবারে তেলেঙ্গাবাগানের পুজোর থিম সাজানো হচ্ছে শিশুশ্রমের বিরোধিতা করে। থিমের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বপ্ন উড়ান’। সমাজে শিশুশ্রম যেভাবে ব্যাধির মত ছড়িয়ে পড়েছে, যেভাবে ছোট্ট ছোট্ট ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে, তার বিরুদ্ধে গর্জে ওঠাই এবার তেলেঙ্গাবাগানের অন্যতম লক্ষ্য। আর এই ভাবনা পরিপূর্ণতা পাচ্ছে থিম শিল্পী পার্থ ঘোষের হাতে।
এবারের প্রতিমা সাবেকি ঘরানার। প্রতিমাশিল্পী নবকুমার দাস। থিমের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মণ্ডপ তৈরি করা হচ্ছে। মণ্ডপের শিল্প নির্দেশক পার্থ ঘোষ ও সিদ্ধার্থ ঘোষ। মণ্ডপে দেখানো হচ্ছে শিশুশ্রমিকদের দুর্দশার জীবন। তবে শেষমেশ দুর্দশা থেকে উদ্ধার পেয়ে তারা স্কুলে যেতে পেরেছে। হাসি ফুটেছে ছোট ছোট নিষ্পাপ মুখগুলোয়। মূল মণ্ডপে একটি বিরাট কেটলির ভিতর রাখা থাকছে মা দুর্গাকে। এবছর তেলেঙ্গাবাগানের পুজোর বাজেট ২২-২৩ লাখ টাকা। পুজোর উদ্বোধন হবে বেশ তাড়াতাড়িই। মহালয়ার পর দিনই। ফলে দর্শনার্থীদের হাতে অনেকটা সময় থাকছে।