দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম পুরনো পুজো বকুল বাগান সার্বজনীন। এবার ৯০ বছর পূর্ণ করতে চলেছে এই পুজো। এ পুজো থিমে তেমন বিশ্বাসী ছিল না। তাই পুজো হত সাধারণ প্যান্ডেল গড়ে। কিন্তু এ বছর থেকে এই পুজোও ঢুকে পড়ল থিমের ভিড়ে। এবারের থিম ‘একলা ফেরা’। ব্যস্ত জামানায় নিত্যনতুন জনসংযোগের বৈদ্যুতিন যন্ত্র, প্রযুক্তি হাতে থাকা সত্ত্বেও কোথাও মানুষের মধ্যে থেকে পুরানো বন্ধনগুলো আলগা হয়ে যাচ্ছে। মানুষের ভিড়েও সবাই কেমন যেন একা হয়ে গেছে। যান্ত্রিক যোগাযোগ মানবিক সূত্রগুলোকে বড় আলাদা করে দিচ্ছে। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবে সেই ঐকান্তিক মেলামেশার হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনাই এবার বকুল বাগানের থিম ভাবনা।
মণ্ডপ তৈরি করতে ১২ হাজার বাঁশ ব্যবহার করছেন উদ্যোক্তারা। সবই আনা হয়েছে ত্রিপুরা থেকে। বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ পাশাপাশি রেখে থিমকে রূপ দেওয়া হচ্ছে মণ্ডপে। ইট-বালি-কংক্রিটের প্যান্ডেলের ভিড়ে এই বহুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ পাশাপাশি থাকায় এই থিম এবার নতুনত্বের দাবি রাখে। থিম শিল্পী বিমল সামন্ত।
বকুল বাগানের প্রতিমা সবসময়েই প্রখ্যাত শিল্পীদের হাতে রূপ পেয়েছে। নিরোদ মজুমদার থেকে শুরু করে রথীন মৈত্র, বিকাশ ভট্টাচার্য, সানু লাহিড়ী, মীরা মুখোপাধ্যায়, পরিতোষ সেন, ইষা মহম্মদ, শ্যামল রায়, শুভাপ্রসন্ন বা ওয়াসিম কাপুর, একের পর এক প্রথিতযশা শিল্পীর ভাবনায় রূপ পেয়ে এসেছে বকুল বাগানের প্রতিমা। ফলে বোঝাই যাচ্ছে এ পুজোয় এতদিন প্যান্ডেলর জৌলুস তেমন থাক না থাক, প্রতিমা দর্শকদের প্রতি বছরই নজরকাড়া রূপ উপহার দিয়েছে। এবার মণ্ডপে মা থাকছেন ঘরোয়া মেয়ের সাজে। প্রতিমাশিল্পী অরুণ পাল। থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে থাকছে থিম সং-ও। সুর বাঁধছেন থিম শিল্পী বিমল সামন্তই।
পুজোর বাজেট আনুমানিক ২০ লক্ষ টাকা। দৈনিক কয়েক হাজার দর্শনার্থী আশা করছেন উদ্যোক্তারা। পুজোর উদ্বোধন চতুর্থীর দিন।