
এ শহরে অনেক বারোয়ারি পুজোই ১০০ ছুঁই ছুঁই। কিন্তু শতবর্ষ পার করা পুজোর সংখ্যা নেহাতই নগণ্য। সেই হাতে গোনা কয়েকটি শতবর্ষ পার করা পুজোর একটি বৃন্দাবন মাতৃ মন্দির। সুকিয়া স্ট্রিটের অপরিসর গলি। সেখানেই হয়ে আসছে এই বারোয়ারি পুজো। ১৯১০ সালে পথ চলা শুরু। সে অনেককালের কথা। তারপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গেছে। অনেক ইতিহাসের সাক্ষী এই পুজো প্রজন্মের পর প্রজন্মের হাত ধরে এগিয়ে চলেছে। গত কয়েক বছর অল্প বাজেটেও ভাবনার বৈচিত্র্যে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল এই পুজো।
এবার পুজো ১০৮ বছরে পা দিয়েছে। তাই এবার বৃন্দাবন মাতৃ মন্দিরের থিম ‘১০৮’। ১০৮ সংখ্যাটি পুজোর ক্ষেত্রে মাঙ্গলিক ধরা হয়। সেই মাঙ্গলিক ভাবনাকেই নতুন করে তুলে ধরা হচ্ছে এবার। পুজোর থিম সাজাচ্ছেন শিল্পী রাজু সূত্রধর। প্রতিমাশিল্পী কৃষাণু পাল। থিমের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিমা সাবেকি ঘরানার।
এবার বৃন্দাবন মাতৃ মন্দিরের পুজোয় থাকছে থিম সং-ও। আগত দর্শনার্থীদের থিমের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে নিতে সুরের মূর্ছনাকে সাজিয়ে তুলছেন আশু-অভিরূপ। এখন অনেক পুজোতেই থিমকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে, আরও হৃদয়স্পর্শী করে তুলতে থিম সং বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা নিচ্ছে।
বৃন্দাবন মাতৃ মন্দিরের এবারের পুজোর বাজেট ৫ লক্ষ টাকা। স্বল্প বাজেটে তাক লাগিয়ে দেওয়া এই বারোয়ারির বিশেষত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবার পুজোর উদ্বোধন তৃতীয়ার দিন। পুজোর ক’দিনে প্রায় ৭ লক্ষ দর্শনার্থী আশা করছেন উদ্যোক্তারা।
তবে বৃন্দাবন মাতৃ মন্দিরের এবারের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব তাঁদের স্কলারশিপের উদ্যোগ। পড়াশোনা থেকে খেলাধুলা, গানবাজনা থেকে ছবি আঁকা, যেকোনও ক্ষেত্রে প্রতিভাবান ২০ জনকে বেছে নিয়ে বছরে তাদের ১০ হাজার টাকা করে স্কলারশিপ দিতে চলেছেন উদ্যোক্তারা। এই মহৎ উদ্যোগ কোথাও গিয়ে এবার বৃন্দাবন মাতৃ মন্দিরের পুজোকে অন্য মাত্রা দেবে বলেই মনে করছেন অনেকে।