১৯৩৬ সালে জগৎ মুখার্জী পার্কের পুজো শুরু হয়। সেইসময়ে এলাকায় ছোট্ট একচিলতে জায়গায় পুজো হত। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে ৮১ বছর আগে যে পুজোটি চালু হয়, তা ছিল সাবেকি পুজো। ১৯৬৯ সাল থেকে ১৯৭৭ পর্যন্ত একটু অন্যভাবে পুজোর চেষ্টা হয় এখানে। পরে ফের সাবেকি পুজোতে ফিরে আসেন উদ্যোক্তারা। তবে কলকাতার নজরকাড়া পুজোর তথাকথিত যে তালিকা ছিল, সেই তালিকায় পড়ত না এই পুজো।
গত বছর বনগাঁ লোকাল করে আচমকাই হৈচৈ ফেলে দেয় জগৎ মুখার্জী পার্কের পুজো। লোকমুখে ছড়িয়ে পড়ে নড়তে থাকা ট্রেনের কামরা। কামরাতে ঢুকলে বাইরের চলমান প্রকৃতি। একেবারে অন্য ছোঁয়া, অন্য ভাবনা নিয়ে কলকাতার অনেকটা ভিড় শুষে নেয় এই পুজো। হঠাৎ দেখা যায় রাজবল্লভপাড়া বাস স্টপে বা শোভাবাজার মেট্রো স্টেশনে নেমে সকলে চলেছেন জগৎ মুখার্জী পার্কের ঠাকুর দেখতে।
জগৎ মুখার্জী পার্কের পুজোর উদ্যোক্তারা যে ধূমকেতু হতে রাজি নন, তা তাঁদের এবারের ভাবনা থেকেই স্পষ্ট। এমনই ভাবনা যে উদ্বোধনের পর ভিড় সামলানো হয়তো কঠিন হবে। এবার পুজোর থিম ‘জলছবি’। পৃথিবীর তিনভাগ জল, একভাগ স্থল। সামনে একটি জাহাজের আদলে প্যান্ডেল। প্যান্ডেলে ঢুকলেই সাবমেরিন। সেই সাবমেরিনে ঢুকে পড়বেন দর্শকরা। তারপর শুধু জল আর জল। চারপাশে জল। দুর্গাকে দেখে ভাসমান বলেই ভ্রম হবে সকলের। থিম শিল্পী সুবল পাল।
প্রতিমাশিল্পীও সুবলবাবু। তবে প্রতিমার পোশাক পরিকল্পনায় রয়েছেন বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার তেজস গান্ধী। প্যান্ডেলের আবহের সঙ্গে খাপ খাইয়ে থাকছে থিম সং-ও। জলমহলকে আরও বাস্তব রূপ দিতে থাকছে আলোর খেলা।
জগৎ মুখার্জী পার্কের পুজোর এবারের আনুমানিক বাজেট ২৩ লক্ষ টাকা। উদ্বোধন হবে তৃতীয়ার দিন। পুজোর দিনগুলোয় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম আশা করছেন উদ্যোক্তারা।