দুচোখে ভরপুর আত্মবিশ্বাস। নিজের প্রতিভার পাপড়ি দুনিয়ার সামনে মেলে ধরার এই তো সুযোগ! সেই সুযোগকে কিছুতেই হারাতে চাননি দক্ষিণ কোরিয়ার ইউরা মিন। গত রবিবার বরফকঠিন মঞ্চে ‘ডেস্পাসিটো’ গানের তালে নিজেকে উজাড় করে দিয়ে পারফরমেন্স করছিলেন তিনি। স্কেটের নৃত্যে দক্ষ মিনের ধনুকের জ্যায়ের মতো বাঁকানো শরীরী বিভঙ্গের খেলায় তখন মুগ্ধ গ্যালারি ভর্তি দর্শক। মিনকে যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছিলেন সহশিল্পী আলেকজান্ডার গেমলিন। চঞ্চল ২ জোড়া নৃত্যমুখর পায়ের কাটাকুটি খেলায় ভালোই জমে উঠেছিল পিয়ংচাংয়ের শীতকালীন অলিম্পিকের আসর। এমন সময়েই ঘটে যায় সেই অঘটন।
হঠাৎ মিনের টকটকে লাল পোশাকের পিছনের হুক খুলে যায়। মিন বুঝতে পারেন, দুর্ভাগ্যবশত ‘পোশাক বিভ্রাট’-এর শিকার হয়েছেন তিনি। যে কোনও মুহুর্তে শরীর থেকে তাঁর পোশাক খুলে পড়ে যেতে পারে। কিন্তু পোশাক খুলে যাওয়ার ভয়ে স্কেটিং করা থামিয়ে দিলে থমকে যাবে তাঁর স্বপ্নও। হাতছাড়া হবে অলিম্পিক মেডেল। তাঁরা দুজনেই ছিটকে যাবেন স্কেটিংয়ের ময়দান থেকে! জীবনের প্রথম বড় প্রতিযোগিতার মঞ্চে হার মানতে চাননি মিন। তাই পোশাক বিপর্যয়ের কথা মাথা থেকে একেবারে ঝেড়ে ফেলে মুহুর্তে সামলে নেন নিজেকে। স্কেটিংয়ের মঞ্চে আধখোলা পোশাকেই মিনের ঝোড়ো গতি অব্যাহত থাকে আরও কিছুক্ষণ।
মিনকে সম্মানহানির হাত থেকে বাঁচাতে সাবধানে তাঁকে আগলে রাখতে সাহায্য করেন পুরুষ সহশিল্পীটিও। উপস্থিত বিচারক ও দর্শকরা মিনের অস্বস্তি কাটাতে তাঁকে উৎসাহ দিতে থাকেন। কঠিন সমস্যার মধ্যেই নিজের পারফরমেন্স শেষ করেন মিন। তাঁর সেই অনমনীয় জেদের স্বীকৃতিও পান তিনি। প্রতিযোগিতায় নবম স্থান দখল করে স্বভাবতই উছ্বসিত বছর ২৩-এর মিন। মেডেল নয়, দর্শকদের ভালোবাসা ও সমর্থনই আশীর্বাদের কাজ করেছিল। এমনটাই মনে করছেন ইউরা মিন।
(ছবি – সৌজন্যে – ট্যুইটার)