আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহণে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়ার পথ যদি দীর্ঘ হয় তবে বিমান মাঝে অন্য বিমানবন্দরে নামে। তারপর ফের গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করে। এতে যেটা হয় তা হল যাত্রীদের দীর্ঘ যাত্রার ধকল নিতে হয়। জেট ল্যাগ ভোগ করতে হয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য একটানা বিমান চালানোর চিন্তাভাবনা অনেকদিন ধরেই চলছিল। অবশেষে সেই লক্ষ্যে একটি পদক্ষেপ নিয়ে ফেলল বিমান সংস্থা কোয়ান্টাস। পরীক্ষামূলক হলেও সফল হল তাদের প্রয়াস।
লন্ডন থেকে সিডনি। ইউরোপ থেকে অস্ট্রেলিয়া। বিশাল পথ। এই পথ অতিক্রম করার জন্য এতদিন মাঝে নামতে হত যাত্রীদের। এবার তা হল না। ১৯ ঘণ্টা আগে লন্ডন থেকে উঠে একটানা যাত্রা করেন তাঁরা। ১৯ ঘণ্টা আকাশেই থাকে বিমানটি। টানা ওড়ে। সেইমত জ্বালানির যোগানও রাখা হয়েছিল। অবশেষে ১৯ ঘণ্টা সফর করার পর বিমানটি যাত্রীদের নিয়ে সিডনি বিমানবন্দরে অবতরণ করে। যা বিমান পরিবহণের ইতিহাসে একটা রেকর্ড। এতটা সময় একটি বিমান আকাশে টানা এর আগে কখনও ওড়েনি।
বিমানে ৫২ জন যাত্রী ও বিমানকর্মীরা ছিলেন। লন্ডন থেকে যাত্রা করার ঠিক ১৯ ঘণ্টা ৩০ মিনিট পর শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১২টায় সিডনি বিমানবন্দরে অবতরণ করে কোয়ান্টাসের বিমানটি। কোয়ান্টাস এই নিয়ে দ্বিতীয় পরীক্ষায় সফল হল। গত মাসে তারা নিউইয়র্ক থেকে সিডনি পর্যন্ত একটানা বিমান চালিয়ে সফল হয়। তারপর এদিন সফল হল লন্ডন থেকে সিডনি উড়ান চালিয়ে। যা দূরত্বের দিক থেকে ১৭ হাজার ৮০০ কিলোমিটার।
এই উড়ানে পাইলটদের শরীরে মস্তিষ্কের পরিস্থিতি দেখার জন্য ইইজি মেশিন লাগানো ছিল। ককপিটে ছিল ৩টি ক্যামেরা। খাবার বলতে সকলের জন্য ছিল স্যান্ডউইচ, ম্যাকারনি দিয়ে চিকেন ব্রোথ, দুধের তৈরি পানাকোটা ডেসার্ট। লন্ডন থেকে সিডনি উড়ানের নাম দেওয়া হয়েছিল সানরাইজ। কারণও ছিল। লন্ডন থেকে সেখানকার সময় ভোর ৬টায় ওড়ে বিমানটি। আর সিডনিতে পৌঁছয় দুপুর সাড়ে ১২টায়। সেটা কিন্তু পরদিন। ফলে উড়তে উড়তেই ভোর হতে দেখেন যাত্রীরা। সময়টা কমে ক্রমশ পূর্বের দিকে আসার ফলে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা