‘রইস’ করার আগে কী অমিতাভ বচ্চনের ডন, ত্রিশূল আর দিওয়ারে মজেছিলেন শাহরুখ খান! হয়তো তাই! কারণ রইসের শাহরুখে সেই অমিতাভের ছায়া যেন একটু বেশি করেই নজর কাড়ল। অমিতাভের অ্যাঙ্গরি ইয়ং ম্যান ইমেজটাও এই সিনেমায় নিজের চরিত্রে ঢেলে ব্যবহার করেছেন এই বলিউড বাদশাহ। ছোট থেকে বড় হওয়া। জীবনের উত্থান পতন। এক ক্রিমিনালের রবিনহুড ইমেজ। প্রান্তিক মানুষের মসিহা হয়ে ওঠার চেষ্টা। আর এই ধরণের ছবির শেষ যেমন হয় সেই গড়পড়তা ছক মেনে শেষে রইসের মৃত্যু। সিনেমার পরতে পরতে নাটকীয়তাকে টানটানভাবে সাজিয়ে তুলেছেন পরিচালক রাহুল ঢোলাকিয়া। শাহরুখের মত বলিষ্ঠ অভিনেতাকে কিভাবে নিংড়ে কাজে লাগাতে হয় তা পরিচালক দেখিয়ে দিয়েছেন। শাহরুখের পাশাপাশি নজর কেড়েছেন নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকি। নওয়াজ যে কতটা বড় মাপের শিল্পী তা এই ছবিতে ফের একবার প্রমাণ করে দিয়েছেন তিনি। নিজের প্রায় সব দৃশ্যের চাহিদা মেনে লজিক্যাল হিউমার-এ অসাধারণ নওয়াজ।
ছবির নায়িকা পাক অভিনেত্রী মাহিরা খানের অভিনয় দেখানোরই বড় একটা সুযোগ ছিলনা। ফলে তাঁর মূল্যায়ন এভাবে হয়তো সম্ভব নয়। তবে প্রধান তিন চরিত্রের পাশাপাশি শাহরুখের ছবিতে ডান হাত হিসাবে জিশান আয়ুবের অভিনয় দর্শকদের মনে ছাপ ফেলেছে। নিজের অভিনয় প্রতিভার প্রতি যথেষ্ট সুবিচার করেছেন জিশান। কিশোর রইসের ভূমিকায় শিশুশিল্পীর অভিনয়ও মনে থাকবে।
এই সিনেমায় গানের প্রয়োজন খুব একটা ছিল না। কিন্তু এখানে সেই হিন্দি সিনেমার রীতি মানা কিছু অপ্রাসঙ্গিক গান ছন্দ কেটেছে। তবে ‘উড়ি উড়ি যায়’ গানটির সুর, পিকচারাইজেশন, কস্টিউম ও কোরিওগ্রাফি বেশ ভাল। এর সঙ্গে মানতে হবে সানি লিওনের আইটেম নাম্বারকে। ওই একটি গানকেই ছবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে হয়েছে। আর সেই লায়লা ও লায়লা গানের তালে সানির দুরন্ত লাস্য ছবির বাড়তি পাওনা। বাদবাকি স্ক্রিনপ্লে, কোরিওগ্রাফি, ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর সবই খুব যত্নের সঙ্গে করা। সবমিলিয়ে ফের বেশ একটা উপভোগ্য সিনেমা ফ্যানদের উপহার দিলেন শাহরুখ খান।