বিজয় মালিয়া ২০১৬ সালের ১ মার্চ সংসদে আসেন। সংসদের সেন্ট্রাল হলে তাঁর সঙ্গে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির দেখা হয়। সেন্ট্রাল হলের একটি কোণায় তাঁরা নিজেদের মধ্যে একান্তে কথা বলেন। এমনভাবে ৫-৭ মিনিট কথার পর সেন্ট্রাল হলের সিটে বসেও বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন দুজনে। যা ওদিনের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করলেই দেখতে পাওয়া যাবে। আর তার ২ দিন পর ৩ মার্চ খবরের কাগজে দেখা যায় বিজয় মালিয়া দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এর থেকে পরিস্কার যে বিজয় মালিয়া অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেই দেশ ছাড়েন। এদিন কংগ্রেসের করা সাংবাদিক বৈঠকে এমনই দাবি করলেন কংগ্রেস সাংসদ পান্না লাল পুনিয়া। সুর চড়িয়ে পুনিয়া বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখলেই বোঝা যাবে তিনি ঠিক কথা বলছেন।
ব্যাঙ্কের ৯ হাজার কোটি টাকা ঋণখেলাপি মামলায় অভিযুক্ত লিকার ব্যারন বিজয় মালিয়া লন্ডনে গত বুধবার বোমা ফাটান। দাবি করেন দেশ ছাড়ার আগে তিনি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। দেশ ছাড়ছেন জানিয়েও ছিলেন। এর পাল্টা অরুণ জেটলি দাবি করেন, এটা ঠিক যে তাঁর সঙ্গে বিজয় মালিয়ার সংসদে দেখা হয়েছিল। কিন্তু তা কোনও আনুষ্ঠানিক বৈঠক ছিলনা। বিজয় মালিয়া নিজেও একজন সাংসদ হওয়ায় তিনি অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়ে যান। তিনি মিটমাটের কথা বললেও অরুণ জেটলি তাঁকে এ বিষয়ে ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
যদিও অরুণ জেটলি সাফাই দিলেও তাতে বিরোধীরা দমে যাননি। কার্যত গোটা বিজেপিকেই অস্বস্তিতে ফেলে দেন তাঁরা। এদিন বিজেপির সেই অস্বস্তি আরও বাড়াল কংগ্রেস। এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে কংগ্রেসের তরফে পিএল পুনিয়ার বক্তব্য সামনে আনা হয়। পরে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী চড়া সুরেই বলেন, যদি ধরেও নেওয়া যায় যে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বিজয় মালিয়া কিছুক্ষণ মাত্র করিডরে কথা বলেছিলেন। তাহলেও অর্থমন্ত্রীর উচিত ছিল এটা ইডি, সিবিআই এবং পুলিশকে খবর দেওয়া যে ঋণখেলাপিতে অভিযুক্ত একজন দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে। তাকে ধরো। কিন্তু তা জেটলি করেননি। আর কেন করেননি তার ব্যাখ্যা তিনি দিন। দেশবাসীকে জানান যে তিনি নিজেই মালিয়াকে দেশ ছাড়তে দিয়েছিলেন। নাকি উপর থেকে তাঁর ওপর নির্দেশ ছিল বিজয় মালিয়াকে দেশ ছাড়তে দেওয়ার। এদিন কার্যত এই প্রশ্নেই স্থির থাকেন রাহুল গান্ধী।
এমন এক ইস্যু যে ২০১৯-এর আগে বিজেপিকে আক্রমণে কংগ্রেসের জন্য মোক্ষম অস্ত্র হয়েছে তা মেনে নিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। বিরোধীদের ক্ষুরধার আক্রমণের এই সুযোগ যে বিজেপিকে স্বস্তিতে থাকতে দেবে না তাও মেনে নিচ্ছেন তাঁরা।