দোল শেষ। শেষ হোলিও। রঙয়ের খেলায় মেতে ওঠার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ফের ১টি বছর। তবে রঙের উৎসবের খেলা কিন্তু সব জায়গায় শেষ হয়নি। ফিলিপিন্স, পাপুয়া নিউ গিনি, ইন্দোনেশিয়া দ্বীপপুঞ্জসহ বেশ কিছু জায়গায় বছরভর চলতে থাকে দোল উৎসব। সেই উৎসবের রঙ খুব টেকসই। রোদ-ঝড়-জল-বৃষ্টিতে তা কোনওভাবেই উঠে যাওয়ার মত নয়। বাহারি রঙ মেখে ওই সমস্ত অঞ্চলের হোলিপ্রেমীদের দেখতেও লাগে চমৎকার। বেগুনি, নীল, আসমানি, সবুজ, হলুদ, কমলা ও লাল। এই ৭ রঙের প্রাকৃতিক আবিরে ৩৬৫ দিন রাঙিয়ে থাকে তারা। যাদের পোশাকি নাম রেনবো ইউক্যালিপটাস।
অরণ্যের এই রঙ পাগল গাছ মিন্দানাও গাম বা রেনবো গাম নামেও পরিচিত। এই গাছের কাণ্ড বিরাট লম্বা। যেমন ইউক্যালিপটাস গাছের হয়ে থাকে। সেই গাছের দীর্ঘ শরীরে কারা যেন সাতরঙা রঙের তুলি বুলিয়ে দিয়েছে বলে মনে হয়। প্রায় ২৫০ ফুট উচ্চতার গাছের পরতে পরতে লেগে রয়েছে নীল, সবুজ, হলুদ, মেরুন, কমলা, বেগুনী রঙের প্রলেপ।
মূলত প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের গভীর অরণ্য বর্ণালী ইউক্যালিপটাস গাছের ঠিকানা। ক্রান্তীয় অঞ্চলের বৃষ্টিবহুল অঞ্চল আর পর্যাপ্ত সূর্যের আলো না হলে এদের আবার চেহারা ও রঙের খোলতাই হয় না। এই কারণে ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস বা ফ্লোরিডার বনাঞ্চলের রেনবো ইউক্যালিপটাসের উচ্চতা তুলনামূলক কম। আর রঙের বৈচিত্র্যও সেইরকম চোখ ধাঁধানোর মত নয়।
রঙের পাশাপাশি রেনবো ইউক্যালিপটাসের অর্থনৈতিক মূল্য অপরিসীম। এই গাছের বাকল দিয়ে তৈরি হয় একধরণের উন্নতমানের মণ্ডের। এইধরনের মণ্ড সবথেকে বেশি তৈরি করে ফিলিপিন্স। আন্তর্জাতিক বাজারে যার চাহিদা বিপুল। এই গাছের আঠার চাহিদাও বিশাল। তাই বর্তমানে কৃত্রিম পদ্ধতিতে রামধনু রঙা ইউক্যালিপটাসের চাষের চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে বিশ্বের নানা দেশে।