ভায়ের হাতে রাখি পরানোর দিন সামনে। গোটা দেশের সামনে এক প্রাণের উৎসব। ভাই-বোনের চিরন্তন বন্ধনের উৎসব। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রাখিও তার ধরণ বদলেছে। একটা সময় ছিল যখন রাখি তৈরি হত ফুল দিয়ে। ফুলের রাখি অবশ্য এখনও আছে। তারপর এল স্পঞ্জের রাখি। সঙ্গে রাংতা। কিছু প্লাস্টিকের মোটিফও জায়গা পেল। তারপর স্কুলের ছাত্রীদের মধ্যে রেক্সিনের সুতো দিয়ে রাখি তৈরির রেওয়াজ হল। এরপর বড় বড় রাখি বদলে ছোট্ট হতে থাকল রাখি। সেইসঙ্গে বেশ একটা গয়না গয়না ভাব। সরু সুতোতেও এল বাহারি চাকচিক্য। দামও চড়ল। এবার সেই রাখিকেও পিছনে ফেলে দিতে চলেছে পরিবেশ বন্ধু রাখি।
রাখি তৈরিতে অনেকটাই প্লাস্টিক ব্যবহার হয়। রাখিবন্ধন উৎসবের পর অধিকাংশ রাখি নষ্ট হওয়ার পর তার জায়গা হয় জঞ্জালের স্তূপে। ফলে দূষণ ছড়ায়। এবার তাই রাখিবন্ধন উৎসবকে একদম অন্যভাবে ভাবতে আসছে ‘সিড রাখি’। এ রাখি একাধারে পরিবেশ বান্ধব। রাখির মধ্যে থাকছে জীবনের উৎস। রাখির মধ্যে থাকছে একটি করে বীজ। যা থেকে গাছ জন্মাতে পারে। এবার রাখি ভাইয়ের হাতে পরানোর পর তা আর ফেলে দেওয়ার দরকার পরবে না। উৎসব শেষে ওই রাখি খুলে কাছে কোনও মাটিতে পুঁতে দিলেই তা থেকে জন্ম নেবে একটি নতুন গাছ।
মহিলা স্বরোজগার সংস্থা এফএলও ও একটি স্টার্ট আপ সংস্থা-র ২ বছরের পরিশ্রমের পর এ বছর বাজারে আসছে সিড রাখি। সারা বিশ্বে প্রতি বছর ৬০ কোটি মানুষ রাখি বন্ধন উৎসবে সামিল হন। প্রায় ৬২০ মিলিয়ন রাখি উৎসবের পরে জঞ্জালে পরিণত হয়। যা থেকে জন্ম নেয় ক্ষতিকারক কার্বন। এসব থেকে পরিবেশকে মুক্তি দিতেই এই সিড রাখির ভাবনা বলে জানাচ্ছেন উদ্যোগীরা। সিড রাখি-তে যেসব বীজ সবচেয়ে বেশি থাকছে সেগুলি হল সূর্যমুখী, ধান, পেঁপে, তুলসী, অমলতাস ইত্যাদি। নাগপুর, কেরালা ও রাজস্থানের স্বরোজগার প্রকল্পের হাত ধরে ৩০ হাজার এমন রাখি তৈরি হচ্ছে এবছর। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা