মহাকাশের অতল অন্ধকারে চলছে এক বিপদজনক গবেষণা। সেই গবেষণার পরিণতি কি মারাত্মক হতে পারে, তার খবর শুধু জানেন ৩ জন। গবেষণা ভালোই চলছিল। হঠাৎ সবকিছু তালগোল পাকিয়ে যায়। প্রবল বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে মহাজাগতিক দুনিয়া। ৩টে রহস্যময় আগুনের গোলা আছড়ে পড়ে সান দিয়েগোর অভয়ারণ্যে। যেখানে ডেভিস ওকয়ের যত্নে ভালোবাসায় বড় হয়ে ওঠা গোরিলা জর্জের বাস।
উল্কাপাতের মত দেখতে ৩টি আগুনের গোলা রাতের আকাশ থেকে আছড়ে পড়ে আচমকা ওলটপালট করে দেয় আপাত শান্ত জর্জের দুনিয়া। মানুষ বন্ধু ডেভিসের ডাক উপেক্ষা করে সবকিছু তছনছ করে সে ছুটে যায় শিকাগোর এনার্জিন গবেষণা কেন্দ্রের দিকে। পথে তার সঙ্গী হয় নরখাদক রাক্ষুসে দানবাকার নেকড়ে। জলপথে সঙ্গী ডাইনোসররূপী কুমির। এই ৩ আতঙ্ক বিধ্বংসী মেজাজে ছুটে চলে একই লক্ষ্যের দিকে।
৩ দানবীয় শক্তির দাপটে কয়েক ঘণ্টায় ধ্বংস হয়ে যাবে শিকাগো। প্রশাসনও তৈরি। দানবদের শেষ করতে শহরের বুকে আছড়ে পড়বে বিশেষ ধরণের বোমা। অতঃপর বিপন্ন সভ্যতাকে বাঁচাতে আসরে নামতেই হয় ডেভিসকে। শুরু হয় ভালর সঙ্গে মন্দের লড়াই। মনুষ্যত্ব বনাম পশুত্বের যুদ্ধ। সৃষ্টি বনাম ধ্বংসের মহারণ। যে লড়াইয়ের মাঝখানে দাঁড়িয়ে জীবন। যার মূল্য বিজ্ঞানের অনেক উর্ধ্বে। ভরপুর অ্যাকশন, টানটান চিত্রনাট্য আর চোখ ধাঁধানো গ্রাফিক্সের বাইরে সেই বার্তাই দিলেন ‘র্যাম্পেজ’-এর পরিচালক ব্র্যাড পিটন।
বিজ্ঞান আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ তা নিয়ে বিতর্ক আজন্মকালের। সেই বিতর্কে কোন দিকে পাল্লা ভারি গাঁজাখুরি গল্পের মোড়কে ছবিতে তা চমৎকার তুলে ধরেছেন পরিচালক। ছবির গল্প জমিয়ে তুলতে আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে দিয়েছেন টুকরো হাসির ক্যান্ডি। এটুকুই যা ছবির দুর্বলতা। ওইটুকু দোষ বাদ দিলে কলাকুশলীদের অভিনয় মনোগ্রাহী। আর আছে দুষ্টু মিষ্টি জর্জ। ছবির রিয়েল হিরো। যার জন্যই এই ছবির জিত। জর্জই শিখিয়ে দিল, চোখের বদলে চোখ নীতিতে চললে দুনিয়াটা একদিন অন্ধ হয়ে যাবে।