সারা বছরই পুরীতে পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। তবে রথযাত্রার সময় যে ভিড় পুরী শহরে হয় তা বছরের আর কোনও সময়ই হয়না। বৃহস্পতিবার রথযাত্রা। পুরীতে ইতিমধ্যেই রথযাত্রার তোরজোড় শেষ। জগন্নাথদেবের রথ ‘নন্দীঘোষ’, তাঁর দাদা বলরামের-র রথ ‘তালধ্বজ’ এবং জগন্নাথদেবের বোন সুভদ্রার রথ ‘দর্পদলন’ পুরী মন্দিরের সামনে তৈরি। রাত পোহালেই রথে চড়বেন জগন্নাথ, বলরাম বা বলভদ্র ও সুভদ্রা। তারপর তাঁদের নিয়ে সেই রথ পাড়ি দেবে মাসির বাড়ির দিকে।
রথ উপলক্ষে পুরীতে একটা ঘরের কোণাও পেতে অনেকগুলো টাকা গুনে দিতে হয়। দেশ বিদেশের পুণ্যার্থীদের ভিড়ে থিক থিক করে গোটা শহর। তিল ধারণের জায়গা নেই। হোটেল থেকে ধর্মশালা, হলিডে হোম এমনকি অনেকে তাঁদের বাড়িতেও ঘর ভাড়া দেন পুণ্যার্থীদের থাকার জন্য। আর এ সময়ে তেমন বেশি খরচ। তবে তার জন্য পুণ্যার্থীদের আগমন আটকে যায়না। লক্ষ লক্ষ মানুষ পুরীতে হাজির হন আগে থেকেই। কেবল একটিবার রথযাত্রার সময় জগন্নাথদেবকে দর্শন করতে। তাঁর রথের রশিতে হাত ছোঁয়াতে। রথযাত্রায় সেই গুন্ডিচা মন্দির পর্যন্ত পা মেলাতে।
পুরীর জগন্নাথ মন্দির থেকে গুন্ডিচা মন্দির আড়াই কিলোমিটার রাস্তা। চওড়া এই রাজপথ রথের দিন শুধু মানুষের ভিড়ে হারিয়ে যায়। শুধু মাথা আর মাথা। সেই ভিড় কিন্তু বুধবারই অনেকটা হাজির হয়েছে পুরীতে। সারাদিন ধরেই পুণ্যার্থীরা সড়ক ও রেল পথে হাজির হয়েছেন এই সমুদ্র শহরে। মাত্র ২ মাস আগেই সুপার সাইক্লোন ফণীর ঝাপটায় বিধ্বস্ত হয়েছিল পুরী সহ ওড়িশার উপকূলবর্তী অংশ। এবার সেই ফণী-র হানায় বিধ্বস্ত পুরীতে রথযাত্রা সুন্দরভাবে সম্পূর্ণ করা প্রশাসনের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জও। রথযাত্রার দিন জগন্নাথদেব দাদা ও বোনকে নিয়ে হাজির হন মাসির বাড়ি। তারপর ৯ দিন সেখানে কাটিয়ে ফেরেন ফের পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে। সেই ফিরতি রথকে বলা হয় ‘বাহুদা যাত্রা’, বাংলায় উল্টোরথ। তবে রথযাত্রায় যে জনসমাগম হয় তা ওদিন হয়না। ওদিন ভিড় থাকে মূলত স্থানীয়দের। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা