দুনিয়া বদলাতে পারে কিন্তু উৎসব তার নিজের ঐতিহ্য নিয়ে ঠিকই বেঁচে থাকে মানুষের জীবনে। যেমন আজও নতুন প্রজন্ম রথের রশিতে টান দিতে মুখিয়ে থাকে। কোনও রথ একতলা, কোনওটা দোতলা, কোনওটা আবার তিনতলা। এক এক রকম রথের এক এক রকম দাম। রথের সামনে কোনওটায় সাতটা ঘোড়া। কোনওটায় ৩টে, ২টো বা ১টা। রথের মাথায় ধ্বজা বোঝাতে থাকে কাঠের ওপর রং করা তিন কোণা পতাকা। কাঁচা কাঠের ওপর রঙ করা এসব রথই কচিকাঁচাদের মনোরঞ্জন করে আসছে বছরের পর বছর ধরে। শনিবার রথের আগে তাই জমজমাট রথের বাজার। কলকাতা সহ বিভিন্ন জায়গায় রথের বাজারে দেদার বিকচ্ছে কাঠের রথ। মাটির তৈরি জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার মূর্তি। গত বৃহস্পতিবার থেকেই বড়দের হাত ধরে কচিকাঁচার দল হাজির হচ্ছে রথ কিনতে। শুক্রবার সেই বিকিকিনি সকাল থেকেই রীতিমত জমজমাট।
রথ সাজাতে আগে বাহারি পাতা, নানা রকম ফুল, মালা ব্যবহার হত। অনেকে টুনি লাইট দিয়ে রথ সাজাত। এখন অবশ্য সময়ের হাত ধরে সেই রথসজ্জায় ঢুকে পড়েছে রঙিন থার্মোকল, বাহারি পশমের দড়ি সহ আরও নানা ধরণের রংবাহারি জিনিসপত্র। এছাড়া রথকে আরও সুন্দর করতে এখন চিনা এলইডি আলোর জুড়ি মেলা ভার। আগে এসব রথের চাকা হত কাঠের তৈরি। এখন সে জায়গায় লোহার চাকা এসে গেছে।
শনিবার বিকেল নামলেই অলিগলি থেকে পার্কে, মাঠে নেমে পড়বে এসব রথ। ছোটদের হাতে ধরা রশিতে পড়বে টান। জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা ছোটদের হাত ধরে বেরিয়ে পড়বেন ঘুরতে। সামনে থাকবে প্রসাদ। আর পাশে জ্বলবে সুগন্ধি ধূপ। বাজবে ভেঁপু। ভেঁপুর শব্দে মুখর হয়ে উঠবে বিভিন্ন পাড়া বা আবাসন। এ শব্দ বছরে কেবল একদিনই মেলে। রথের দিন।