পুরীর জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার রথের মাহাত্ম্যকথা
জগন্নাথদেবের নন্দীঘোষ, বলরামের তালধ্বজ, সুভদ্রার দেবীদলন, ৩ ভাইবোনের ৩টি রথ। প্রত্যেকটি রথের রয়েছে বিশেষত্ব। সেই রথের খুঁটিনাটি।
জগন্নাথদেবের রথের নাম নন্দীঘোষ। উচ্চতা ৪৫ ফুট। মোট ৮৩২টি কাঠের টুকরো লাগে এই রথ নির্মাণে। পীত বর্ণের রথের চূড়ায় চক্র ও শ্রীগরুড়দেব অধিষ্ঠিত থাকার জন্য এর আরও দুটি নাম চক্রধ্বজ বা গরুড়ধ্বজ।
জগন্নাথের ১৬টি রথের চাকা ষোড়শকলার প্রতীক স্বরূপ। চাকার ব্যাস ৭ ফুট। পাটাতন ৩৫ বর্গফুট। রথের রক্ষক শ্রীনৃসিংহনাথ। সারথির নাম মাতলি। চারটি অশ্বের নাম রেচিকা, মোচিকা, সূক্ষ্মা ও অমৃতা। এদের গায়ের রঙ সাদা।
বলরামের নীলবর্ণের রথের শীর্ষভাগে তালচিহ্নের কারণে রথের নাম হয়েছে তালধ্বজ। একে হলধ্বজও বলে। উচ্চতা ৪৭ ফুট। চাকার ব্যাস সাড়ে ছয় ফুট। রথটি নির্মাণ করা হয় ৭৬৩টি কাঠের টুকরো দিয়ে। পাটাতন ৩৪ বর্গফুট। চাকার সংখ্যা ১৪টি।
চাকাগুলি চতুর্দশ মন্বন্তর-রূপ ব্রহ্মার পরমায়ু কালের ব্যঞ্জক। একই সঙ্গে চতুর্দশ ভুবনেরও প্রতীক। তালধ্বজ রথের রক্ষক শেষাবতার। সারথির নাম সুদ্যুম্ন। রথে অশ্বের সংখ্যা চার। এদের নাম স্থিরা, ধূতি, স্থিতি ও সিদ্ধা। গায়ের রঙ কালো।
এবার সুভদ্রার রথের কথা। পদ্মধ্বজ, দেবীদলন বা দেবীরথ নামেই রথের পরিচিতি। উচ্চতায় ৪৩ ফুট। চাকার ব্যাস ৬ ফুট। কৃষ্ণবর্ণের রথ। এটি নির্মাণে কাঠের টুকরো লাগে মোট ৫৯৩টি। পাটাতন ৩৩ বর্গফুট সুভদ্রার রথের বারোটি চাকা দ্বাদশ মাসাত্মক বৎসররুপী কার্যচক্র।
এই রথের রক্ষক বনদুর্গা। সারথি অর্জুন। রথের চারটি অশ্বের নাম অধর্ম, অজ্ঞান, অপরাজিতা ও জ্যোতিনী। এদের গায়ের রং কালো।