National

কৃষক আন্দোলনে ধুন্ধুমার, লালকেল্লায় ঢুকে পতাকা ওড়ালেন আন্দোলনকারীরা

প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লিতে কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিল ঘিরে তুলকালাম চলল সারাদিন। আন্দোলনরত কৃষকরা লালকেল্লায় ঢুকলেন ট্র্যাক্টর নিয়ে। উড়িয়ে দিলেন তাঁদের পতাকা।

নয়াদিল্লি : লালকেল্লায় যে স্তম্ভে ভারতের জাতীয় পতাকা জায়গা পায়, সেই স্তম্ভে চড়ে নিজেদের পতাকা উড়িয়ে দিলেন কৃষক আন্দোলনে শরিকরা। কার্যত এদিন লালকেল্লার দখল নিয়ে নেন তাঁরা।

জাতীয় পতাকা যে স্তম্ভে সদম্ভে ওড়ে, সেখানে এভাবে চড়ে আন্দোলনকারীদের পতাকা ওড়ানোর পর দেশের গরিমাই ধুলুণ্ঠিত হল। ক্ষুণ্ণ হল জাতীয় পতাকার মর্যাদাও। একথা মেনে নিচ্ছেন প্রায় সকলেই। এ কেমন আন্দোলন যা দেশের মর্যাদাকে নষ্ট করে? এ প্রশ্নের উত্তর কিন্তু কৃষক আন্দোলনের নেতৃত্বকেই দিতে হবে।


দিল্লির উপকণ্ঠে হাজার হাজার কৃষকদের কৃষক আন্দোলন কিন্তু এতদিন সুশৃঙ্খলভাবেই চলছিল। হয়তো সেই ভরসায় কৃষক নেতারা জানিয়ে দিয়েছিলেন প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন তাঁরা যে ট্র্যাক্টর মিছিল দিল্লিতে বার করতে চান তা নির্দিষ্ট রুটেই হবে। প্রজাতন্ত্র দিবসকে মাথায় রেখে অন্যদিকে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল এমন এক ট্র্যাক্টর মিছিল হলে তা আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে পারে।

কৃষক নেতারা কিন্তু জানিয়ে দিয়েছিলেন তা যাতে না হয় তা দেখা তাঁদের কাজ। কিন্তু এদিন তাঁরা কী তাঁদের আশ্বাস রক্ষা করতে পারলেন? নাকি তাঁদের হাত থেকে এদিন অচিরেই বেরিয়ে গেল আন্দোলনের রাশ? কারণ এদিন যা লালকেল্লায় হল তা প্রমাণ করে নেতাদের এদিনের আন্দোলনে কোনও রাশই ছিলনা।


সিঙ্ঘু, পাণ্ডবপুরা, আইটিও সহ বিভিন্ন জায়গায় সকাল থেকেই ক্রমশ পারদ চড়ছিল। কৃষক আন্দোলনকে সামনে রেখে এদিন কিন্তু ট্র্যাক্টর মিছিল শুরু হয়েছিল নিয়ম মেনেই। কিন্তু পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে তা নির্দিষ্ট রুটের তোয়াক্কা না করে এগোতে যেতেই পরিস্থিতি ঘোরাল আকার নেয়।

ব্যারিকেড ভেঙে মধ্য দিল্লিতে ঢোকার চেষ্টা হলে পুলিশ ট্র্যাক্টর মিছিল আটকাতে প্রথমে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায়। তারপর মৃদু লাঠিচার্জও করে। কিন্তু তাতে বিশেষ কাজ কিছু হয়নি। বরং ট্র্যাক্টর নিয়ে কৃষকরা এগোতেই থাকেন।

কয়েক জায়গায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। হাজার হাজার কৃষকের এই জোয়ারের সামনে পুলিশের সংখ্যা ছিল নিতান্তই নগণ্য। ফলে এক সময় নিরস্ত হয় পুলিশ। তাদের দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিলনা।

ট্র্যাক্টর নিয়ে এদিন কার্যত দিল্লির বিভিন্ন দিকে ঢুকে পড়েন আন্দোলনকারী কৃষকরা। পৌঁছে যান লালকেল্লাতেও। লালকেল্লার যে স্তম্ভে জাতীয় পতাকা সদর্পে ওড়ে সেখানে এক যুবককে দেখা যায় তাঁদের পতাকা হাতে উঠে পড়তে।

তারপর জাতীয় পতাকা যেখানে ওড়ে সেখানে ওই যুবক উড়িয়ে দেন তাঁদের পতাকা। পতাকা লাগানোর পর স্তম্ভে কার্যত ঝুলন্ত অবস্থাতেই তাঁকে আস্ফালনও করতে দেখা যায়। যা কার্যত দেশের মাথাই নিচু করল।

এতদিন ধরে যে কৃষক আন্দোলন তিল তিল করে গড়ে উঠেছিল, কেন্দ্রের কৃষি আইন ফেরত নেওয়ার দাবিতে কৃষকরা যে সুশৃঙ্খল আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন তা এদিন কিন্তু কিছু আন্দোলনকারীর তাণ্ডবে অচিরেই শেষ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা

Show Full Article
Back to top button