Kolkata

অন্য বিসর্জন

ছৌ থেকে সাঁওতাল, ভানু সিংহের পদাবলী থেকে মহিষাসুরমর্দিনী, নগর কীর্তন থেকে সিঁদুর খেলা এবং আরও অনেক অনেক কিছু। আলোকের ঝর্ণাধারায় অবগাহন করে সনাতনি থেকে আধুনিক সংস্কৃতির এক টুকরো বাংলা যেন এক একটা রঙিন ক্যানভাসের মত চলে যাচ্ছে সামনে দিয়ে। ভরে যাচ্ছে মন। ব্যাকুল হচ্ছে আরও সুন্দরের অপেক্ষা। পরতে পরতে চমক। পরতে পরতে নব নব ভাবনা। একটার রেশ কাটতে না কাটতেই এসে পরছে পরের ট্যাবলো। পুরো পরিবার নিয়ে কৈলাসমুখী মা দুর্গা। বর্ণচ্ছটার বিচ্ছুরণ চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে। মন ভরিয়ে দিচ্ছে‌। ঘণ্টা তিনেকে এমন এক অভিজ্ঞতা কলকাতার বুকে বসেও সম্ভব! পুজো শেষেও এত আনন্দ আগে তো কখনও অপেক্ষা করেনি বঙ্গ জীবনে। শারদ ত্রয়োদশী মানে তো ক্লান্ত শহরের ভাঙা মণ্ডপে মুখ কালো করে পড়ে থাকা একাকী প্রদীপ। এত আলো তো কখনও দেখেনি এ শহর! যা এই কিছু না ভোলা মুহুর্ত দিয়ে গেল!

রেড রোডে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে ‘পুজো শেষে ঠাকুর দেখা’-র ট্যাগ লাইনের অছিলায় আসলে যা হল তা যথার্থই কার্নিভাল। রঙে-বর্ণে-জাঁকজমকে কোথাও এতটুকু খামতি নেই। টানটান করে বসিয়ে রাখার মত একটা ভাবনা। ৩৯টি বারোয়ারি। তাদের এক এক থিম। এক এক আঙ্গিকের দুর্গা প্রতিমা। ভাবনার সঙ্গে খাপ খাইয়ে প্যান্ডেল থেকে প্রতিমা সর্বত্র একটা মানানসই সামঞ্জস্য। আর সেই ভাবনাকে তুলে ধরার জন্য হাতে মাত্র ৩ মিনিট। বাইরে থেকে পেশাদার শিল্পী নয়, পাড়ার বাসিন্দাদেরই তুলে ধরতে হবে তাদের কাজ। কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতা বা ধারণা ছাড়াই এটা তুলে ধরা চাট্টিখানি কথা নয়! কিন্তু কী অবলীলায় মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুণীজনদের সামনে তা তুলে ধরলেন সকলে। আপ্লুত মুখ্যমন্ত্রীও। বারবার মঞ্চ থেকে ফুলে তোড়া হাতে নেমে এসেছেন তিনি। হাতে তুলে দিয়েছেন অচেনা মুখগুলোর হাতে। চোখ জুড়নো কাজ। মুগ্ধ করার মত সুর-তাল-ছন্দ।


আগামী বছর এ কার্নিভাল বহরে বাড়বে। আর ৩৯টা নয়। ৭৫টা পুজো কমিটি এখানে যোগদানের সুযোগ পাবে। এদিন জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। আর রেড রোডে যাঁরা এমন এক অপরূপ মুহুর্ত নির্বিঘ্নে উপভোগ করার আয়োজন করলেন! মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সেই কলকাতা পুলিশ এদিন পেল ১০০-এ ১০১!

(মুখ্যমন্ত্রীর ছবি – সৌজন্যে – ট্যুইটার – এআইটিসি অফিসিয়াল)


Show Full Article

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button