মহিষাসুরমর্দিনী নৃত্যানুষ্ঠান, ফুটবল, ধুনুচি নাচ, শাঁখ, ঢাক, মন্ত্রোচ্চারণ, স্তোত্রপাঠ, গান, ছৌ নাচ কী ছিল না! সঙ্গে ঝলমলে সাবেকি পোশাক, গয়না, ডাকসাইটে নায়িকা, মুম্বইখ্যাত গায়ক, প্রবীণ ফুটবলার, ভারতখ্যাত হকি খেলোয়াড়। আর দর্শকাসনে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে বিভিন্ন দফতরের মন্ত্রী, সাংসদ। সব মিলিয়ে দুর্গাপুজো কার্নিভালের দ্বিতীয় বর্ষে এদিন বিকেল নামতেই রেড রোড সেজে উঠেছিল কনের সাজে। আলোভাসি রাজপথ আর জাঁকজমক মিলিয়ে মনেই হচ্ছিল না শহরটা কলকাতা। রিও কার্নিভালের খ্যাতি জগতজোড়া। এদিন রেড রোড দেখে কিছুক্ষণের জন্য মনে হল কেন এই কার্নিভালটা কম কিসের? এটাই বা জগৎ বিখ্যাত নয় কেন? ঠাকুর ভাসানে তাসা, ব্যান্ড, আলোর গেট, ধুনুচি নাচ এই পর্যন্ত বাঙালির পরিচিত। কিন্তু বিসর্জনও যে এমন ঝলমলে হতে পারে তা গত বছরই টের পেয়েছে বঙ্গবাসী।
এবার সেই কার্নিভালে বাড়তি পাওনা ফুটবল। একের পর এক বারোয়ারি তাদের ঠাকুর নিয়ে এগিয়েছে। সঙ্গের শোভাযাত্রায় অধিকাংশের ক্ষেত্রেই নজর কেড়েছে ফুটবল। সামনেই অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ শুরু ভারতে। যার ফাইনাল সহ অনেকগুলি ম্যাচ রয়েছে কলকাতায়। তাকেই সামনে রেখে এবার কার্নিভাল ফুটবলময়। অবশ্য বাদ পড়েনি সাবেকিয়ানা। মহিষাসুরমর্দিনী নৃত্যানুষ্ঠান করতে দেখা যায় ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়কে। ঢাকের তালে কোমর দোলাতে দেখা যায় মুম্বইয়ের বিখ্যাত গায়ক অভিজিতকে। সঙ্গে ছিল অভিনেত্রী শুভশ্রীর ত্রিনয়নী দুর্গারূপ। এছাড়া কোনও বারোয়ারি নেচেছে ধুনুচি নাচ। কোনও বারোয়ারি বাজিয়েছে শাঁখ। কোনও বারোয়ারির পরিবেশন ছিল লালপার সাদা শাড়িতে একেবারে সাবেকি সাজে মহিলাদের এগিয়ে চলা। এভাবেই ৬৮টি প্রতিমা আলোর পথ বেয়ে এগিয়ে গেছে অন্ধকার গঙ্গায় বিসর্জনের পানে।
দুর্গাপুজো শেষ। শেষ বাঙালির প্রাণের উৎসব। তবু শেষ হয়ে হইল না শেষের মত অন্তিম আনন্দটা এদিন টিভির পর্দায় কার্নিভালে চোখ রেখে পুষিয়ে নিলেন বঙ্গবাসী।