নোটবন্দির পর অনেকেই মনে করেছিলেন যতই কষ্ট হোক অন্তত একটা শান্তি যে কালো টাকার বান্ডিল নিয়ে যারা বসে আছে তারা সায়েস্তা হবে। জাল নোটের কারবারিরা জব্দ হবে। কিন্তু ৫০০ ও ১০০০ হাজার টাকার সেই নোট যেভাবে ফের ব্যাঙ্কে ফেরত এসেছে তাতে এবার পাল্টা পালে হাওয়া পেয়েছেন বিরোধীরা। আর আমজনতার একটাই প্রশ্ন তাহলে নোটবন্দি করা হল কেন? এ প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বুধবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট সামনে আসার পর। যেখানে পরিস্কার করে দেওয়া হয়েছে নোটবন্দি যে ২ ধরণের কাগজি নোটের ওপর করা হয়েছিল সেই ৫০০ ও ১০০০ টাকা মিলিয়ে ব্যাঙ্কের কাছে ফেরত এসেছে ৯৯ দশমিক ৩ শতাংশ নোটই!
নোটবন্দির আগে বাজারে ৫০০ ও ১০০০ হাজার টাকার নোট মিলিয়ে চালু ছিল ১৫৪১৭ দশমিক ৬৩ লক্ষ কোটি টাকা। নোটবন্দির পর ৫০০ ও ১০০০ টাকার পুরনো নোট ফেরতের হিড়িক পড়ে যায়। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রিপোর্টে জানাচ্ছে, পুরনো হয়ে যাওয়া নোট ব্যাঙ্কের কাছে ফেরত আসে ১৫৩১০ দশমিক ৭৩ লক্ষ কোটি টাকা। অর্থাৎ পরিস্কার যে প্রায় সব নোটই ফের ব্যাঙ্কে ফেরত আসে। যা শতাংশের হিসাবে ৯৯ দশমিক ৩ শতাংশ।
এই রিপোর্ট যে মোদী সরকারকে যথেষ্ট অস্বস্তিতে ফেলল তা মেনে নিচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা। এই রিপোর্টের পর নোটবন্দির প্রয়োজনীয়তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল। যে নোটবন্দি সারা দেশ জুড়ে চরম আর্থিক সমস্যা তৈরি করেছিল, চরম সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছিল আমজনতাকে।
এদিন রিপোর্ট প্রকাশের পর সুযোগ লুফে নিয়ে কংগ্রেস সাংবাদিক সম্মেলন করে দাবি করে, যে কয়েকটি কারণকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তখন নোটবন্দি করেছিলেন তা তাহলে কোথায় গেল? প্রায় সব টাকাই যদি ব্যাঙ্কে ফেরত এল তবে কালো টাকা, সন্ত্রাসবাদীদের হাতে থাকা টাকা বা জাল নোটের কারবারিদের সেসব নোট গেল কোথায়? কারণ বাজারে থাকা প্রায় সব ৫০০ ও ১০০০ হাজার টাকার নোট তো ব্যাঙ্কে জমা পড়েই গেছে! আমজনতাও কিন্তু রিপোর্ট শুনে বিরক্ত। তাঁদেরও প্রশ্ন, তাহলে নোটবন্দি করে আদপে লাভের লাভ হল কী? কাদেরই বা এতে লাভ হল? সাধারণ মানুষ তো চরম হয়রানির শিকার হলেন।