এই আশ্চর্য পাথর পাথরের জন্ম দেয়, বড় হয়, এদিক সেদিক ঘুরে বেড়ায়
পাথর তো স্থবির। হাজার হাজার বছর ধরে তা একই জায়গায় স্থির হয়ে থাকে। কিন্তু এমন পাথরও আছে যারা বেড়িয়ে আসতে পারে। নতুন পাথরের জন্মও দিতে পারে।
বিশ্বে অনেক কিছুই আজও সাধারণ মানুষ তো বটেই, এমনকি বিজ্ঞানীদেরও হতবাক করে দেয়। এমনই একটি হল এক ধরনের পাথর। এই পাথরগুলির গা মোলায়েম হয়। কোনও কোণা বা খোঁচার মত থাকেনা। পাথরগুলি বৃষ্টি পড়লেই যেন জেগে ওঠে। বৃষ্টিতে ভেজার পরই পাথরগুলির গা দিয়ে সিমেন্টের মত দেখতে পদার্থ বার হতে থাকে। যা পাথরগুলিকে আরও বড় করতে থাকে।
আবার সময়ে সময়ে এ পাথর থেকে নতুন পাথর ভেঙে বেরিয়ে যায়। তারপর সেই মা পাথরের মতই মোলায়েম শরীর নিয়ে বেড়ে উঠতে থাকে। পাথর পাথরের যে জন্ম দিতে পারে এমনটা সত্যিই অবাক করে।
পাথরগুলি আবার চলাফেরাও করে। পাথর মানে যে এক জায়গায় স্থবির হয়ে থাকবে এমনটা নয়। এ পাথর দিব্যি এধার ওধার ঘুরে বেড়ায়। কোনও প্রাণি বা মানুষ তাদের সরায় না, হাওয়ার ধাক্কাতেও নড়ে না। তবু তারা সরে যায়। বেশিদিন এক জায়গায় থাকেনা।
সাধারণ মানুষের চোখে এই পাথরগুলি আশ্চর্যের চেয়ে কম কিছু নয়। বিজ্ঞানীরা পাথরগুলি পরীক্ষা করে দেখেছেন এগুলি কোটি কোটি বছর আগে এক ভূমিকম্পের ফলে তৈরি হয়েছিল।
শক্ত পাথরগুলিতে রয়েছে অনেকটা বেলে পাথর। ট্রোভান্ট নামে এই পাথরগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম কার্বোনেট রয়েছে। বৃষ্টি হলে এই পাথরগুলির কেন্দ্রস্থলে এক ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়। যার জেরে পাথরের গা দিয়ে সিমেন্টের মত পদার্থ নিঃসরণ শুরু হয়।
আবার এই পাথর ভাঙলে এর মধ্যে গোল গোল করে চিহ্ন দেখতে পাওয়া যায়। যা তাদের বয়স জানতে সাহায্য করে। ঠিক গাছের গুঁড়ির মত। এগুলি মাটির উত্তাপ বৃদ্ধি বা কমের প্রভাবে নিজের স্থান পরিবর্তন করতে পারে।
এই আজব পাথর কিন্তু বিশ্বের সর্বত্র পাওয়া যায়না। রোমানিয়ার ভালসিয়া কাউন্টিতে কেবল এমন পাথরের দেখা মেলে। এই পাথরদের পরিবার বড় হয় এখানেই।
রোমানিয়ার ভালসিয়া কাউন্টিতে গেলে ট্রোভান্ট পাথরের পরিবারের দেখা মেলে। যেখানে অতিকায় পাথর যেমন মাটির ওপর পড়ে আছে, তেমনই ছোট্ট চেহারার পাথরও রয়েছে। যা আগামী দিনে কিন্তু ঠিক বড় হয়ে উঠবে।
এই পাথরগুলিকে রক্ষা করতে ইউনেস্কো এগিয়ে এসেছে। তারা এই অঞ্চল ঘিরে রেখেছে রক্ষা করতে পাথরগুলিকে। তবে চাইলে মানুষ এই পাথর দেখতে রোমানিয়ার ভালসিয়া কাউন্টিতে আসতেই পারেন।