যে চায়ের দোকানে চা শেষ করে ভাঁড়টাও খেয়ে নেন সকলে
চায়ের দোকান তো রাস্তার মোড়ে মোড়ে পাওয়া যায়। কিন্তু এমন চায়ের দোকান পাওয়া মুশকিল যেখানে চা পান করে কাপটা স্বচ্ছন্দে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে পারেন গ্রাহকরা।
কাজের ফাঁকে গরম চায়ে চুমুক দেওয়া ভারতীয়দের এক পুরনো অভ্যাস। চায়ের দোকানেরও তাই অভাব নেই। সর্বত্র পাওয়া যায় চায়ের দোকান।
পাড়ার মোড়ে মোড়ে। সে নিছক আড্ডা মারতে হোক বা কাজের ফাঁকে, এসব চায়ের দোকানে কিছুটা সময় কাটান কমবেশি সকলেই। গরম চায়ে চুমুক দিয়ে শরীরটা একটু চাঙ্গা করে নেন।
আগে একচেটিয়া ভাঁড় ব্যবহার হত চায়ের দোকানে। পরে আসে কাগজের কাপ বা প্লাস্টিকের কাপ। তাও এখন দিব্যি চলে। চা খেয়ে দোকানের পাশে রাখা ভাঁড় ফেলার জায়গায় সেটি ফেলে পয়সা মিটিয়ে ফের গন্তব্যে পাড়ি জমান সকলে।
কিন্তু এই দেশেই এমনও এক চায়ের দোকান রয়েছে যেখানে ভাঁড় ফেলার কোনও জায়গা রাখা থাকেনা। কারণ কেউ তা ফেলেন না। বরং খেয়ে ফেলেন।
আজগুবি শুনতে লাগলেও এটাই বাস্তব। তামিলনাড়ুর মাদুরাই শহরে রয়েছে এমনই একটি চায়ের দোকান। যেখানে দিব্যি মানুষজন চা খেয়ে চায়ের কাপটা চিবিয়ে খেয়ে ফেরত যান।
অন্য চায়ের দোকানে চায়ের সঙ্গে বিস্কুট অনেক সময়ই নিয়ে থাকেন গ্রাহকরা। এই দোকানে সেই বিস্কুটের বালাই নেই। এই দোকানে চা খেতে এলে চায়ের সঙ্গে বিস্কুট কেউ ভুলেও চান না।
রাস্তার ধারে এই নীলগিরি টি কিয়স্কে ভিড় সারাদিন লেগে থাকে। সেখানে গেলে গ্রাহকের হাতে ভাঁড়ে চা তুলে দেওয়া হয়। প্রায় ভাঁড়ের মত রংয়ের হলেও চায়ের পাত্রটি ঠিক ভাঁড়ের মত দেখতে নয়, বরং ছোট গ্লাসের মত।
যাঁরা কোন্ আইসক্রিম খান তাঁদের কাছে তুলনায় ভাঁড়টা অনেক বেশি চেনা। চকলেট স্বাদের বিশেষ বিস্কুট দিয়ে তৈরি এই ভাঁড়।
গ্রাহকরা চায়ে চুমুক দিয়ে আয়েশ করে চা শেষ করে সেই বিস্কুট কাপ খেয়ে নেন। আবার অনেকে চায়ে চুমুক দিয়ে কিছুটা শেষ করে ভাঁড়ের ওপরের খালি অংশ খেতে শুরু করে দেন। তাতে চায়ে চুমুকটাও হয়, আবার বিস্কুটে কামড়টাও হয়।
এই অভিনবত্ব অবশ্য শুরু থেকেই ছিলনা। সাধারণ আর পাঁচটা চায়ের দোকানের মতই ছিল এই দোকান। কিন্তু ২০১৯ সালের অক্টোবরে ভারত সরকার প্লাস্টিকের ওপর কড়াকড়ি তৈরির পর দোকানের মালিক বিবেক সতপতি-র মাথায় এই অভিনবত্বটা আসে।
এই বিস্কুট কাপে চা দেওয়া চা ও সঙ্গে বিস্কুটও খাওয়া হচ্ছে। আবার ভাঁড় হোক বা চায়ের কাপ, দূষণ কিছুতেই ছড়াচ্ছে না। ফলে এই পরিকল্পনা পরিবেশ বান্ধবও বটে।