চলে গেলেন অভিনেত্রী, গায়িকা তথা ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যারের প্রতিষ্ঠাতা রুমা গুহঠাকুরতা। কলকাতার বালিগঞ্জ প্লেসের বাড়িতেই তাঁর মৃত্যু হয়। সোমবার ভোর সওয়া ৬টায় তাঁর মৃত্যু হয়। বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তাঁর ৩ সন্তান রয়েছেন। গায়ক অমিত কুমারের নাম সকলের জানা। এছাড়াও তাঁর অন্য ২ সন্তান অয়ন গুহঠাকুরতা ও শ্রমণা চক্রবর্তী। তাঁর মৃত্যুতে একটা যুগের অবসান হল। বাংলা সংস্কৃতি জগতে তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে। আনেকেই তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর বাড়িতে হাজির হন।
১৯৫২ সালে তাঁর বিয়ে হয় কিশোর কুমারের সঙ্গে। তাঁদের একটি সন্তানও হয়। সেই অমিত কুমার এখন একজন প্রতিষ্ঠিত গায়ক। ১৯৫৮ সালে কিশোর কুমারের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় রুমার। তার ঠিক ২ বছর পর ১৯৬০ সালে তিনি বিয়ে করেন চিত্রনাট্যকার অরূপ গুহঠাকুরতাকে। তাঁদের ২ সন্তান শ্রমণা ও অয়ন। কিশোর কুমারের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হলেও ছেলে অমিত কুমারের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক চিরকালই ভাল ছিল। শেষের দিকে অমিত কুমারের কাছে মুম্বইতেই থাকতেন তিনি।
কিশোর কুমারের সঙ্গে যে বছর বিবাহবিচ্ছেদ হয়, সেই বছর রুমা বাংলা সংস্কৃতি জগতে এক অধ্যায়ের সূচনা করেন। সত্যজিৎ রায় ও সলীল চৌধুরীর সহযোগিতায় গড়ে তোলেন ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যার। ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যারের নাম এক সময়ে দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলা গণসঙ্গীতে ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যার পথিকৃৎ হয়ে ওঠে। সকলের মুখে মুখে ঘুরত এই নাম।
দেবব্রত বিশ্বাসের ছাত্রী রুমা গুহঠাকুরতা আশিতে আসিও না, বাঘিনী, পলাতক-এর মত বিভিন্ন সিনেমায় গান গেয়েছেন। অভিনয়তেও তিনি ছিলেন সুপটু। ফলে সত্যজিৎ রায়, তপন সিংহ সহ বাংলার প্রথমসারির চিত্র পরিচালকদের সঙ্গে তিনি কাজ করেছেন। অভিনয় করেছেন অনেক বাংলা সিনেমায়। সেই রুমা গুহঠাকুরতা এদিন চলে গেলেন। রেখে গেলেন তাঁর এতদিনের কাজ। যা তাঁকে চিরকাল বাঁচিয়ে রাখবে সকলের মনে।