আকাশ থেকে ঝরে ঝরে পড়ছে সোনা। একটা বা ২টো নয়, মুঠো মুঠো। মাটিতে পড়তেই সেইসব সোনার বার ভেঙে হয়ে যাচ্ছে খণ্ডবিখণ্ড। সব মিলিয়ে যার ওজন ৩.৪ টন। অথচ সেই সোনা দৌড়ে গিয়ে তুলে নেওয়ার উপায় নেই সাধারণ মানুষের। সরকারি সম্পত্তি বলে কথা। তাতে হাত দিলেই হাজতবাস অবধারিত। তাই এমন আজব স্বর্ণবৃষ্টির সাক্ষী হয়েও মনখারাপ প্রত্যক্ষদর্শীদের।
গত বৃহস্পতিবার মস্কোর ইয়াকুৎসুক এলাকার বাসিন্দাদের রাতটা কেটেছে চরম উত্তেজনায়। মার্চ মাসে ওই অঞ্চল ঢেকে থাকে জমাটবাঁধা বরফে। তাপমাত্রা নেমে যায় মাইনাসের অনেক নিচে। চারদিক গাঢ় কুয়াশায় ঘিরে থাকে। রাস্তায় বার হলে সাধারণ মানুষের ভরসা টর্চের আলো।
বৃহস্পতিবার বাস ধরতে তাই টর্চ নিয়ে রাস্তায় বার হয়েছিলেন কয়েকজন বাসিন্দা। টর্চের আলো রাস্তার ওপর পড়তেই বেশ কিছু উজ্জ্বল জিনিস চোখে পড়ে তাঁদের। চকচকে জিনিসটার ওপর ঝুঁকে পড়তেই চোখ কপালে ওঠার জোগাড় হয় বাসিন্দাদের। এত সোনার বার! জীবনে চোখে দেখেননি কেউ! দাবানলের মত রাস্তায় কয়েক কোটি দামের সোনা পড়ে থাকার খবর ছড়িয়ে যায় গোটা এলাকায়।
যদিও ১৫৬ মিলিয়ন ডলারের সোনা পকেটস্থ করার সুযোগ পাননি শহরবাসী। কারণ, অ্যান্টোনভ এএন-১২ পণ্যবাহী বিমান থেকে সোনা পড়ে যাওয়ার খবর কানে এসেছিল পুলিশেরও। খবর পেতেই ইয়াকুৎসুক বিমানবন্দর এলাকা ঘিরে ফেলেন তাঁরা। এয়ারক্রাফট থেকে পড়ে যাওয়া ২০০টি সোনার বারের মধ্যে ১৭২টি বার উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, উড়ানের সময় প্রবল ঝঞ্ঝার কারণে কোনওভাবে খুলে গিয়েছিল বিমানের হ্যাচ। যার জেরে ঘটে যায় বিপত্তি। বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় আর কোনও সোনাদানা পড়ে আছে কিনা তার সন্ধান করছে পুলিশ। ৩৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সোনা, প্ল্যাটিনাম ও হিরের মত মহার্ঘ সব ধাতু ছিল ওই বিমানটিতে। যা প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে হাতছাড়া হতে বসেছিল রাশিয়ার সরকারের। পুলিশের তৎপরতায় সেসব এবারের মত রক্ষা পেল।