অমর প্রেমকথা, ভালবাসার টানে ২০০ কিলোমিটার পথ হাঁটল প্রেমিক বাঘ
মানুষই প্রেমের টানে ছুটে যেতে পারে এমন ভাবনা কিন্তু ভুল। আর তা আরও একবার প্রমাণ করে দিল একটি বাঘের ২০০ কিলোমিটার ধরে হেঁটে চলা।
ছোট্ট অবস্থায় তাদের উদ্ধার করেছিলেন পশু উদ্ধারকারীরা। এমন অনেক সদ্যোজাত বাঘ যারা মা বাবার সঙ্গে নেই তাদের বাঁচাতে এই প্রয়াস চলতেই থাকে। সেভাবে একটি সংরক্ষণ কেন্দ্রে তাদের এনে রাখা হয়।
মানুষের সংস্পর্শ নামমাত্র করেই তাদের প্রকৃতির মাঝেই জায়গা হয়। সেখানেই বড় হতে থাকে বরিস, সেতলায়ারা। সেখানেই ছোট থেকে তাদের মধ্যে একটা গভীর হৃদয়ের টান তৈরি হয়।
বরিস ও সেতলায়া নিজেদের মত করে একসঙ্গে থাকতে থাকে। তাদের যখন ১৮ মাস বয়স হয় তখন তাদের নিয়ে জঙ্গলে ছাড়া হয়। রাশিয়ার আমুর বাঘ প্রজাতির বাসস্থান হল প্রি আমুর অঞ্চল।
সেখানে বরিস এবং সেতলায়াকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে তাদের এক জায়গায় ছাড়া হয়নি। বিস্তীর্ণ জঙ্গলের নানা প্রান্তে বাঘদের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে তাদের আলাদা আলাদা জায়গায় ছাড়া হয়। তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয় ২০০ কিলোমিটারের।
বরিস এবং সেতলায়ার প্রেমের টান কিন্তু এই দূরত্ব মেনে নিতে পারেনি। দেখা যায় বাঘদের পুরনো অভ্যাস অনুযায়ী তারা একই জায়গায় ঘোরে। তাদের একটা অঞ্চল থাকে। কিন্তু বরিস তার মধ্যে থেমে থাকেনি।
সে হাঁটতে থাকে। সোজা হাঁটতে থাকে। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে সে হেঁটে চলে। অবশ্য তার এই যাওয়ার দিকে নজর রেখেছিলেন সংরক্ষণকারীরা। দেখা যায় বরিস আসলে হেঁটে চলেছে তার প্রেমের টানে। সেতলায়ার টানে।
এভাবে ৩ বছর ধরে সে যেতে থাকে। তারপর ২০০ কিলোমিটার অতিক্রম করার পর বরিস পৌঁছে যায় তার ভালবাসার মানুষের কাছে। সেতলায়া বরিস ফের এক হয়। তারা একসঙ্গে থাকতে শুরু করে। তাদের একটি ফুটফুটে সন্তানও হয়েছে।
বরিস ও সেতলায়ার এই প্রেম কাহিনি অমর প্রেমকথার মতই মুখে মুখে ঘুরছে। বিশ্বের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হওয়ায় নানা প্রান্তের মানুষের তা নজরে আসে।