পাওয়া গেল সমুদ্র চড়ে বেড়ানো গরুর কঙ্কাল
মানুষের লোভ এই প্রজাতিটিকে অবলুপ্ত করে দিয়েছে। অত্যধিক শিকার পৃথিবীর বুক থেকে মুছে দিয়েছে স্তন্যপায়ী সমাজের অন্যতম বিশাল আকৃতির এই সদস্যদের।
রাশিয়ার পূর্ব উপকূলে খোঁজ পাওয়া গেল বিশালাকৃতি সমুদ্রে চড়ে বেড়ানো গরুর কঙ্কালের। কয়েক লক্ষ বছর আগে পৃথিবীর বুকে এদের জন্ম হলেও শেষ এধরনের প্রাণির দেখা মেলে ১৭৬৮ খ্রিস্টাব্দে।
মানুষের অতিরিক্ত লোভ এই প্রজাতিটিকে অবলুপ্ত করে দিয়েছে। অত্যধিক পরিমাণে শিকার পৃথিবীর বুক থেকে মুছে দিয়েছে স্তন্যপায়ী সমাজের অন্যতম বিশাল আকৃতির এই সদস্যদের।
এরা জলের গভীরে সাঁতরে বেড়াতেই বেশি ভালবাসত। আনুমানিক ২৬ লক্ষ বছর আগে প্রাগৈতিহাসিক প্লেইস্টোসিন যুগে আবির্ভাব হয় সমুদ্র গরুদের।
১৭৪১ খ্রিস্টাব্দে জার্মান বিজ্ঞানী জর্জ স্টেলার প্রথম সমুদ্র গরুদের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন। তাঁর নামেই এদের নামকরণ হয় ‘স্টেলারস সি কাউ’।
স্বভাবে শান্ত, দন্তহীন এই প্রজাতির প্রাণিগুলি সাধারণত দল বেঁধে ঘুরে বেড়াতে ভালবাসত। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশের সাথে নিজেদের মানিয়ে নিয়ে এরা টিকে ছিল কয়েক লক্ষ বছর। কিন্তু বিশালাকার সমুদ্র গরুর মাংসের লোভে একসময় যথেচ্ছ পরিমাণে এদের শিকার করা শুরু হয়।
১৭৬৮ সালে যে কটি সমুদ্র গরু অবশিষ্ট ছিল, তাদেরও মেরে ফেলে প্রজাতিটিকেই নিশ্চিহ্ন করে দেয় চোরা শিকারির দল। লুপ্ত প্রজাতি হিসাবে ঘোষণা করা হয় স্টেলারস সি কাউ-কে।
১৯৮৭ সালে রাশিয়ার পূর্ব উপকূলে সাইবেরিয়ায় স্টেলারস সি কাউ-এর একটি কঙ্কাল উদ্ধার করেন বিজ্ঞানীরা। এবারে উদ্ধার হওয়া ৫ থেকে ৭ টন ওজনের কঙ্কালটি স্টেলারস সি কাউ-এর বৃহত্তম কঙ্কাল বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ৫ দশমিক ২ মিটার দীর্ঘ কঙ্কালটি স্কন্ধকাটা। এমনকি বেশ কয়েকটি হাড় কঙ্কালটিতে অনুপস্থিত।
প্রায় ৪ ঘণ্টার পরিশ্রমে সমুদ্র তট খুঁড়ে বিশালাকৃতি কঙ্কালটি উদ্ধার করেন বিজ্ঞানীরা। কঙ্কালটি পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীদের অনুমান অষ্টাদশ শতক নাগাদ প্রাণিটির মৃত্যু হয়।