‘শাড়ি পরতে না পারা ভারতীয় নারীদের লজ্জা পাওয়া উচিত’, বিতর্কিত মন্তব্যে ট্রোল্ড সব্যসাচী
তাঁর ডিজাইন করা লাল টুকটুকে বেনারসি পড়ে প্রশংসার বন্যায় ভেসে গিয়েছিলেন অনুষ্কা শর্মা। দিল্লিতে আয়োজিত রিসেপশনে বিরাট ঘরণীর পরা সেই বেনারসি মন জয় করে নিয়েছিল হবু কনেদের। এমনকি টিনসেল টাউনের হাওয়ায় এমন খবরও ভাসছে যে তাঁর তৈরি শাড়ি দিয়েই নাকি হবু পুত্রবধূ দীপিকা পাড়ুকোনকে জন্মদিনে আশীর্বাদ সেরেছেন পাত্র রণবীর সিংয়ের মা! বিয়ের দিনও নাকি সব্যসাচীর ‘এক্সক্লুসিভ’ শাড়িতেই সেজে উঠবেন দীপিকা! দেশের বিখ্যাত ডিজাইনারের কাছে দীপিকার এমন আবদারের কথাও ছড়িয়ে পড়েছে বি-টাউনে।
অভিনব শাড়ি আর সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়। এক নিঃশ্বাসে এখন এই দুটো নামকে জুড়ে দিচ্ছেন ফ্যাশন বিশেষজ্ঞরা। অভিনেত্রী বা মডেল, তাঁর সৃষ্ট শাড়ির ডিজাইনে সেজে উঠেছেন বহু তারকাই। সব্যসাচী মনে করেন, শাড়িতেই অনন্যা ভারতীয় নারী। আর সেই শাড়ি যে ভারতীয় নারী পড়তে জানেন না, তাঁর লজ্জা পাওয়া উচিৎ। এমনটাই মনে করছেন দেশের অন্যতম সেরা ডিজাইনার। আর তাঁর সেই মন্তব্যে বিতর্কের ঝড় উঠেছে ফ্যাশন দুনিয়ায়।
সব্যসাচী ৮০ হাজার টাকায় শাড়ি বিক্রি করে থাকেন। তাই হয়তো কিছু সংখ্যক ভারতীয় মহিলা শাড়ি পড়েন না। ‘ব্র্যান্ড’-এ পরিণত ডিজাইনারকে খোঁচা দিয়ে ট্যুইট করেছেন কেউ কেউ। আরেক পুরুষ এখন শেখাতে এলেন নারীদের কি পরা উচিত! এই ভাষাতেও সব্যসাচীকে কটাক্ষ করেছেন অনেকে। আবার কারোর খোঁচার তির এসেছে একটু অন্যভাবে। যে সব নারীরা শাড়ি পরতে জানেন না, সব্যসাচীর মতে তাঁরা তাহলে ‘অসভ্য’। পাল্টা ব্যঙ্গে শাড়ির গুণকীর্তন করা পোশাক পরিকল্পককে এক হাত নিয়েছেন বেশ কয়েকজন।
গত শনিবার হার্ভার্ড ইন্ডিয়া সম্মেলনে ভারতীয় ছাত্রছাত্রীদের সামনে বক্তব্য রাখছিলেন সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়। সম্মেলনে শাড়ি পরতে গিয়ে মেয়েদের সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন করে বসেন এক পড়ুয়া। তাঁর প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ভারতীয় নারীদের শাড়ির প্রতি অনীহা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সব্যসাচী। পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর পোশাক শাড়ি। সকলেই এই পোশাকের গুণগ্রাহী। ভারতীয় নারীকে এই শাড়িতেই চিনে নেয় বিশ্ববাসী। খোলাখুলি এই ভাষায় শাড়ির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ওঠেন সব্যসাচী। শাড়ির মাহাত্ম্যের দিক বোঝাতে গিয়ে দীপিকা পাড়ুকোনের প্রসঙ্গও টেনে আনেন তিনি। দীপিকা সব অনুষ্ঠানে শাড়ি পড়ে যান বলে দাবি করেন শাড়িপ্রেমী সব্যসাচী। পাশ্চাত্যের পোশাকের দিকে বেশি ঝোঁক দেখানোয় আধুনিক প্রজন্ম দূরে সরে যাচ্ছে তার শিকড় থেকে। আক্ষেপের সুর শোনা যায় সব্যসাচীর গলায়। তিনি পড়ুয়াদের বোঝানোর চেষ্টা করেন কিভাবে মা ঠাকুমারা শাড়ি পরেই ঘুমোতে যেতেন। আবার শাড়িতে কোনওরকম ভাঁজ ছাড়াই ঘুম থেকে তাঁরা উঠতেন। তাঁর আরও দাবি, তবু ‘জেন ওয়াই’ প্রজন্ম শাড়িকে বাঁচিয়ে রাখলেও পুরুষদের ধুতি আজ কার্যতই ‘মৃত’।
(ছবি – সৌজন্যে – ইন্সটাগ্রাম – সব্যসাচী অফিশিয়াল)