বিকেল হলে সিঙ্গারা খেতে মন চায়, সিঙ্গারার এ দেশে আগমনের কাহিনি চমকপ্রদ
বিকেলের জলখাবারে সিঙ্গারার টানকে হালফিলের কোনও ফাস্টফুডও কেড়ে নিতে পারেনি। কিন্তু সেই সিঙ্গারার জন্ম এ দেশে নয়। এ দেশে আসাটাও চমকে দেওয়া ঘটনা।
চাউমিন, রোল, পিৎজা, বার্গার, মোমো বা আরও নানা ধরনের মুখরোচক জলখাবারে বাজার ভর্তি। ফলে মানুষের কাছে এখন বিকেলের দিকে মুখ চালানোর অনেক সুযোগ। কিন্তু এতকিছুর ভিড়েও আদি অনন্ত সিঙ্গারা কিন্তু ম্লান হয়নি। সিঙ্গারার জনপ্রিয়তাকে নতুন কোনও খাবারই কেড়ে নিতে পারেনি।
সাধারণভাবে এ রাজ্যে যা সিঙ্গারা ভারতের অন্য প্রান্তে তা সামোসা। যে সিঙ্গারা আপামর বাঙালি তথা ভারতবাসীর অন্যতম পছন্দের জলখাবার, সেই সিঙ্গারা বা সামোসা কিন্তু এ দেশের খাবারই নয়। যা ভারতে আসার কাহিনিও বেশ চমকপ্রদ।
ইতিহাস বলছে সিঙ্গারা বা সামোসার জন্ম ভারতে নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যে। দশম শতাব্দীর আশপাশে এই খাবারটি সেখানে তৈরি হয়। সেই সময় আরব্য খানাপিনার যে সব লেখনী পাওয়া যায় সেখানে সানবুসাক বা সানবুসাজ নামে খাবারের কথা পাওয়া যায়। যা আদপে ছিল সিঙ্গারা।
মধ্যপ্রাচ্য থেকে এই খাবার ভারতে আসে দিল্লির পথ ধরে। দিল্লির শাসকরা ১৩ শতাব্দীতে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকজন খানসামাকে রান্নার জন্য দিল্লিতে নিয়ে আসেন। তাঁরা এই রেসিপি সঙ্গে করে নিয়ে আসেন মধ্যপ্রাচ্য থেকে।
আমির খসরুর লেখায় প্রথম এই সিঙ্গারার কথা পাওয়া যায়। তারপর ইবন বতুতার লেখাতেও সেই সামোসার উল্লেখ মেলে। সে সময় রানিদের বিশেষ করে প্রিয় ছিল এই খাবার।
সে সময় সিঙ্গারা বা সামোসায় মাংসের ব্যবহার হত। সঙ্গে থাকত পেঁয়াজ ও অন্যান্য মশলা। ভাজা হত খাঁটি ঘিয়ে। এরপর সময়ের হাত ধরে সিঙ্গারা ছড়িয়ে পড়েছে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে।
মাংসের জায়গায় ভারতে আলুর ব্যবহার বেশি হতে শুরু করে সিঙ্গারায়। তবে এখনও মাছের বা মাংসের সিঙ্গারা যে পাওয়া যায়না তেমনটা নয়।