তোড়জোড় শুরু হয়েছিল গতকাল রাত থেকেই। এদিন সকালের আলো ফুটতেই বাড়ি বাড়ি থেকে ভেসে এল শাঁখের আওয়াজ। চেনা মন্ত্রের আওয়াজ। আজ সরস্বতী পুজো। তবে এবার তিথি এমনভাবেই পড়েছে যে অনেকে গত রবিবারও পুজো সেরে নিয়েছেন। তবে স্কুল, কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অনেকের বাড়িতে সোমবারই হয়েছে পুজো। দ্রুত তিথি ছেড়ে যাচ্ছে, তাই এদিন ভোর থেকেই বিভিন্ন বাড়ি থেকে ভেসে আসে শাঁখ, কাঁসর-ঘণ্টা, উলুধ্বনি। পুষ্পাঞ্জলির চেনা মন্ত্রে গুঞ্জরিত হতে থাকে চারপাশ। ধুপ, ধুনোর চেনা মন ভাল করা গন্ধ পুজোর বাতাসকে আরও মোহময় করে তোলে।
এই বসন্ত পঞ্চমী তিথিটির প্রতীক্ষায় সারা বছর থাকে ছাত্রছাত্রীরা। সকালে পুষ্পাঞ্জলি দিতে স্কুলে বা কলেজে যাওয়া। সেখানে বন্ধুদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা। প্রসাদ খাওয়া। দুপুরে কোথাও খিচুড়ি তো কোথাও লুচি আলুর দম। বন্ধুদের সঙ্গে সে খাওয়া যেমনই হোক, তা অমৃত সমান। এদিন সকাল থেকে শহরের রাস্তায় ধরা পড়েছে চেনা ছবি। বাসন্তী রঙের শাড়িতে কিশোরীরা যেমন মেতেছে পুজোতে, তেমনই গেরুয়া বা অন্য রঙের পাঞ্জাবীতে কিশোরকুল। বাদ যাননি তরুণ-তরুণীরাও। এদিন যেমন সরস্বতী পুজো তেমনই আবার বাঙালির অলিখিত ভ্যালেন্টাইনস ডে! ফলে হৃদয়ের একটু বেশি কাছে থাকা প্রিয় মানুষটার সঙ্গে কিছুটা সময় না কাটালে আর সরস্বতী পুজোতে আনন্দ ষোলোকলা পূর্ণ করল কই! অগত্যা কেউ সিনেমা, তো কেউ চেনা অচেনা পার্ক বা সরস্বতী পুজোর প্যান্ডেলেই একটু নিভৃত আলাপচারিতায় মনের মানুষের সঙ্গে সকলের মধ্যে থেকেও একটু নিজের মত কাটিয়ে নিয়েছে। সব মিলিয়ে সরস্বতী পুজো এদিন স্কুল, কলেজ, বাড়ি, ক্লাব সর্বত্রই পালিত হচ্ছে যথাযোগ্য মর্যাদা, খুশি, হৈচৈ আর আনন্দে। আর সেই খুশিটা একটু বেশি করেই তারিয়ে উপভোগ করেছে ছাত্রছাত্রীরা। আফটার অল, বছরে এই দিনটাই তো সব বইখাতা মা সরস্বতীর পায়ে অর্পণ করে একটা অফিসিয়াল বইখাতাহীন ছুটি! সেটা আনন্দের না হয়ে যায় কোথায়!