জেমস বন্ডের চরিত্রে অভিনয় তাঁকে বিশ্বজোড়া খ্যাতি দিয়েছিল। সেই রজার মুর চলে গেলেন। মৃত্যুকালে ৮৯ বছর বয়স হয়েছিল তাঁর। তাঁর পরিবারের তরফে মৃত্যু খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
সুইৎজারল্যান্ডে ছিলেন তিনি। সেখানেই দুরারোগ্য ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন। তবে তাঁর পরিবারের তরফে জানান হয়েছে বেশিদিন ক্যানসারের কষ্ট ভোগ করতে হয়নি রূপোলী পর্দার এই মহাতারকাকে। অল্প কিছুদিনের লড়াইয়ের পরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন তিনি। স্যার রজার মুরের ইচ্ছা মেনে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে মোনাকোতে।
কাল্পনিক ব্রিটিশ সিক্রেট এজেন্ট জেমস বন্ড ০০৭-এর চরিত্রে তাঁর দুরন্ত অভিনয় খুব দ্রুত সারা বিশ্বে তাঁকে খ্যাতনামা করে দেয়। মোট ৭টি বন্ড সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি।
১৯৭৩ সালে করেন প্রথম বন্ড চরিত্র। ‘লিভ এন্ড লেট ডাই’ সিনেমায় আত্মপ্রকাশেই মানুষের মন জয় করে নেন রজার। এরপর ১৯৭৪ সালে ‘ম্যান উইথ দ্যা গোল্ডেন গান’, ১৯৭৭-এ ‘দ্যা স্পাই হু লাভড মি’, ১৯৭৯-এ ‘মুনব়্যাকার’, ১৯৮১-তে ‘ফর ইয়োর আইজ ওনলি’, ১৯৮৩-তে ‘অক্টোপুসি’ এবং ১৯৮৫-তে ‘অ্যা ভিউ টু অ্যা কিল’।
পরপর বন্ড চরিত্রে তাঁর সফল অভিনয় মানুষের কাছে একসময়ে তাঁকেই বন্ড করে তোলে। অন্য কাউকে ওই চরিত্রে মেনে নেওয়াতেও আপত্তি ছিল বিশ্ববাসীর।
বন্ড ছাড়াও ১৯৬০ সালে আমেরিকায় ‘দ্যা পারসুয়েডর’ ও ‘দ্যা সেন্ট’ নামে দুটি সিরিয়ালেও রজার মুরের অভিনয় সকলের মনে থাকবে।
অভিনয় ছাড়াও ইউনিসেফের হয়ে অনেক কাজ করেছেন রজার। প্রয়াত অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্ন তাঁকে ইউনিসেফে নিয়ে যান। ১৯৯১ সালে সেই ইউনিসেফের গুডউইল অ্যাম্বাসেডর হিসাবে নিযুক্ত হন।
রজার মুরের জন্ম ইংল্যান্ডে। রয়্যাল অ্যাকাডেমি অফ ড্রামাটিক আর্টস থেকে অভিনয় শিক্ষা। ১৯৬০ সালে টিভি সিরিয়ালে অভিনয় দিয়ে কাজ শুরু করেন।
১৯৬৬ সালে জেমস বন্ড চরিত্রে তিনি আর অভিনয় করবেন না বলে জানিয়ে দেন শঁ কনারি। শুরু হয় নতুন বন্ড খোঁজা। সেখানেই সুযোগ এসে যায়।
বন্ডের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তাঁকে চুল কেটে ফেলতে হয়। কমাতে হয় ওজন। আর প্রথম আত্মপ্রকাশেই তাঁকে মনে ধরে যায় বিশ্ববাসীর। শুরুই হয় বন্ড হিসাবে পথচলা।
সেই প্রবাদপ্রতিম রজার মুর চলে গেলেন। রেখে গেলেন তাঁর ইতিহাস সৃষ্টি করা কিছু কাজ। যা তাঁকে অমর করে রাখবে।