চলে গেলেন বাম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি, একটা যুগের সমাপ্তি
বাম নেতৃত্বের কাছে একটা বড় ধাক্কা ছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণ। সেই ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই চলে গেলেন আর এক বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি।
ভারতের বামপন্থী রাজনীতির প্রথমসারিতে যে নামগুলি রয়েছে তার একটি অবশ্যই সীতারাম ইয়েচুরি। সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি প্রায় ৩০ বছর ধরে সিপিএম-এর সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী পলিটব্যুরো-র সদস্য ছিলেন।
ফুসফুসের সংক্রমণ ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সীতারাম ইয়েচুরি ভর্তি ছিলেন দিল্লি এইমসে। তাঁর নিউমোনিয়ার মত সমস্যা ধরা পড়ার পর তাঁকে গত ১৯ অগাস্ট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এইমসে তখন থেকেই ভর্তি ছিলেন তিনি।
অবস্থার অবনতি হওয়ায় সীতারাম ইয়েচুরিকে আইসিইউ-তে রাখা হয়। সেখানেই দীর্ঘ লড়াইয়ের পর অবশেষে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টে ৩ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
মাদ্রাজে ১৯৫২ সালে জন্ম সীতারাম ইয়েচুরির। রাজনৈতিক জীবনে তিনি ছিলেন বাংলার খুব কাছের মানুষ। বাংলা বুঝতেন। বাংলায় কথাও বলতে পারতেন। দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন তাঁর বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়া।
রাজনৈতিক হিসাবেই জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন। ক্রমে ছাত্র রাজনীতির ধাপ পার করে ভারতের বাম রাজনীতির মুখ হয়ে ওঠেন সীতারাম ইয়েচুরি। ১৯৯২ সালে সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য হন। তারপর থেকে পলিটব্যুরোর সদস্য হিসাবে সারাজীবন কাটিয়েছেন।
২০০৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার সাংসদও ছিলেন সীতারাম ইয়েচুরি। ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর যে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা গ্রেফতার হন তাঁদের মধ্যে সীতারাম ইয়েচুরিও ছিলেন।
সীতারাম ইয়েচুরির মৃত্যু ভারতীয় রাজনীতির এক বড় অপূরণীয় ক্ষতি বলেই মেনে নিচ্ছেন দলমত নির্বিশেষে সকলেই। তাঁর প্রয়াণে শোক ব্যক্ত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, বিজেপি নেতা নিতিন গডকরী প্রমুখ।