প্রচণ্ড কড়া জগন্নাথদেবের মহাস্নানবিধি – ভুল হলে দেওয়া হয় শাস্তি
যাত্রার সময় যে মহাস্নান হয় তার নাম ‘যাত্রা মহাস্নান’। প্রতিদিন যেভাবে স্নান হয়, ওই একইভাবে স্নান হয় মহাস্নানাদিতে। সিংহাসন থেকে জয়বিজয়দ্বার হয়ে ধোয়া হয় দক্ষিণদ্বার পর্যন্ত।
পুরুষোত্তম ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সেবক ছাড়া অন্য কেউ জগন্নাথদেবের শ্রীঅঙ্গ স্পর্শ করলে মহাস্নান করাতে হয় শ্রীবিগ্রহকে।
আর একটি হল শ্রীবিগ্রহের ‘বড় মহাস্নান’। জয়বিজয়দ্বার থেকে রত্নবেদি পর্যন্ত এই জায়গার মধ্যে যদি কোনও সময় মল, মূত্র, রক্ত, হাড়, চামড়া, থুতু ইত্যাদি অপবিত্র বস্তু দেখা যায়, কিংবা কুকুর প্রবেশ করে অথবা পুজোর সময় কোনওভাবে ভোগসামগ্রী অপবিত্র হয়, তাহলে জগন্নাথবিগ্রহের ‘বড় মহাস্নান’ হয়ে থাকে।
যাত্রার সময় যে মহাস্নান হয় তার নাম ‘যাত্রা মহাস্নান’। প্রতিদিন যেভাবে স্নান হয়, ওই একইভাবে স্নান হয় মহাস্নানাদিতে। সিংহাসন থেকে জয়বিজয়দ্বার হয়ে ধোয়া হয় দক্ষিণদ্বার পর্যন্ত।
জগন্নাথদেবের ভোগের কোনও দ্রব্য অপবিত্র হলে সিদ্ধ বা অসিদ্ধ সমস্ত ডাল তরকারি মাটিতে গর্ত করে পুঁতে ফেলা হয়। পড়ে হোম করে আবার ভোগ রান্না করা হয় উনুন জ্বেলে।
স্নান-মহাস্নান কর্মাদিতে যে অতিরিক্ত খরচ হয়, তা জরিমানা-স্বরূপ আদায় করা হয় তাঁর কাছ থেকে, যার অসাবধানতায় ভোগসামগ্রী অপবিত্র হয়েছে।
রান্নার কাজের জন্য যথাসময়ে আহ্বান করেন সুয়ার-পাণ্ডাদের ‘লেঙ্কা’ উপাধিধারী সেবকরা। ভোগ রান্নার আগে হোম করে অগ্নিস্থাপন করেন তাঁরা। রান্না করেন মহাসুয়ার ও পিটাসুয়ার। ঘি সরবরাহ করেন ‘রোষমেকাপ’রা। ডালবাটা, ডালভাঙা ও চাল পরিস্কার করেন ‘সমার্থ’রা। দই দুধ ছানা ও পাপড়ি ইত্যাদি সরবরাহ করেন ‘মহাভোই’।
রান্নার সময় উপস্থিত থেকে সমস্ত কিছু পরিদর্শন করেন ‘রোষ-পাইক’। রান্নাঘরের দরজায় থেকে রান্নার সমস্ত সামগ্রী পরীক্ষা করে (কোনও নিষিদ্ধ দ্রব্য যেমন পিঁয়াজ রসুন ইত্যাদি না যায়।) পাঠিয়ে থাকেন ভিতরে।