জীবনটা বামপন্থী রাজনীতিকে উৎসর্গ করেছিলেন। আমৃত্যু তিনি মনে প্রাণে ছিলেন একজন বামপন্থী কর্মী। যে সিপিএমের হাত ধরে তাঁর প্রত্যক্ষ বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়া সেই সিপিএম তাদের দলীয় অনুশাসনের কথা বলে একসময়ে পার্টি লাইন অমান্য করায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে। সেই কষ্ট শেষ দিন পর্যন্ত বয়ে বেড়িয়েছেন সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়। তবে সেই কষ্ট তাঁকে অন্য দলে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দেয়নি। নানা প্রলোভন থাকা সত্ত্বেও অন্য দলে কখনও যোগ দেননি সোমনাথবাবু। মনে প্রাণে বামপন্থী এই মানুষটিকে কেবল তাঁর পার্টিই দূরে সরিয়ে দিয়েছিল।
সেই অভিমান এদিন ঝরে পড়ল তাঁর পরিবারের গলায়। যে সিপিএম সোমনাথবাবুকে দল থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল, সেই দলের প্রধান কার্যালয় আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের মুজফফর আহমেদ ভবনে সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের মরদেহ নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাবে সরাসরি না করে দিল তাঁর পরিবার। এমনকি বসন্ত রায় রোডে তাঁর বাড়িতে যখন সোমনাথবাবুর মরদেহ আনা হল তখন সিপিএম চেয়েছিল তাঁর দেহ লাল পতাকায় মুড়ে দিতে। যেটাও এক কথায় নাকচ করে দেয় সোমনাথবাবুর পরিবার।
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, সিপিএম নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র সহ অনেকে বাম নেতা এদিন সোমনাথবাবুকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। পরে সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, তাঁরা লাল পতাকায় মুড়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরিবারই শেষ কথা। তাঁরা যা সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই চূড়ান্ত। এমনকি পরিবারের তরফ থেকে সিপিএমের প্রতি এই ক্ষোভের কারণে সিপিএম লাল পতাকায় চারদিক মুড়ে দেওয়া থেকেও বিরত থাকে এদিন।