প্রয়াত কিংবদন্তী অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
৪০ দিনের লড়াই শেষ। চলে গেলেন কিংবদন্তী অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। রবিবার বেলা সওয়া ১২টায় মৃত্যু হয় তাঁর।
কলকাতা : সব লড়াই শেষ। অবশেষে চলে গেলেন কিংবদন্তী অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। গত শুক্রবার থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। শনিবার তা আরও সংকটজনক পরিস্থিতিতে পৌঁছে যায়।
রাতেই চিকিৎসকেরা তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের সব কথা জানান। রবিবার সকালেই বেলভিউতে পৌঁছে যান তাঁর মেয়ে ও নিকট আত্মীয়রা।
সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁর মেয়ে পৌলমীকে সব কথা জানান। কার্যত চিকিৎসকেরা হাল ছেড়েই দেন।
সৌমিত্রবাবুকে যে ওষুধই দেওয়া হচ্ছিল তা কাজ করছিল না। অক্সিজেন বাড়ানো যাচ্ছিল না। গভীর কোমায় চলে গিয়েছিলেন তিনি। তার পরেও চিকিৎসকেরা হাল না ছাড়া লড়াই চালিয়ে যান। কিন্তু আর কিছুই কোনও কাজে এল না। শরীর জবাব দিল।
৪০ দিনের টানা লড়াই কম কথা নয়। সৌমিত্রবাবুও লড়াই দিয়েছেন বিছানায় শুয়ে। আর তাঁর সাথে চিকিৎসকেরাও লড়াই দিয়েছেন রাত দিন এক করে।
কখনও তাঁর শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতির খবর মিলেছে। তো কখনও চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন তাঁর শারীরিক অবস্থার ফের অবনতি হয়েছে।
সৌমিত্রবাবুর মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। গত ৫ অক্টোবর করোনা নিয়ে বেলভিউতে ভর্তি হন তিনি। তারপর সেখানেই কেটেছে ৪০টা দিন।
করোনা নেগেটিভ এলেও তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। মাল্টি অর্গান ফেলিওর হতে থাকে। কিডনি থেকে স্নায়ু, একের পর এক সমস্যা ধরা পড়ছিল।
চিকিৎসকদের ১৫ জনের টিম তৈরি করে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। সব রকম লড়াই চিকিৎসকেরা দেন। ডায়ালিসিস থেকে ট্র্যাকোস্টমি, সবই করা হয়েছে। ছিলেন ভেন্টিলেশনে। কিন্তু সেই ভেন্টিলেশন থেকে আর বার করা গেলনা তাঁকে।
সৌমিত্রবাবুর শারীরিক অবস্থায় অবনতির খবর পেয়ে রবিবার সকাল থেকেই চলচ্চিত্র জগতের বহু বিশিষ্টজন হাসপাতালে আসতে শুরু করেন। খবর নেওয়ার চেষ্টা করেন তাঁর পরিস্থিতির।
সৌমিত্রবাবুর মৃত্যু বাংলা সিনেমা জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি একথা মেনে নিচ্ছেন সকলেই। বাঙালির ড্রয়িং রুম থেকে হেঁশেল, সর্বত্রই সৌমিত্রবাবু ছিলেন পরিচিত মুখ।
সত্যজিৎ রায়ের অত্যন্ত স্নেহভাজন ছিলেন তিনি। তাঁর বহু সিনেমায় সৌমিত্রবাবুর অভিনয় সকলকে মুগ্ধ করেছে। জীবনে একের পর এক সম্মান জিতে নিয়েছেন সৌমিত্রবাবু। সেই মানুষটা এদিন চলে গেলেন। রেখে গেলেন তাঁর অবিস্মরণীয় অগুন্তি কীর্তি।