মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সৌমিত্রবাবুর শেষযাত্রার কথা জানালেন মেয়ে
গলা কাঁপছিল। ভেঙে পড়ছিলেন। বাবার শেষযাত্রার কথাটা জানানো যে কতটা কঠিন তা স্পষ্ট হচ্ছিল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে পৌলমী বসুকে দেখে।
কলকাতা : সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় প্রয়াত। এই খবর পাওয়ার পরই বেলভিউতে হাজির হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কথা বলেন সৌমিত্রবাবুর মেয়ের সঙ্গে। সেখানেই স্থির হয় কীভাবে হবে সৌমিত্রবাবুর শেষ যাত্রা।
১টা নাগাদ বেরিয়ে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে ছিলেন সৌমিত্রবাবুর মেয়ে। মেয়ে পৌলমীই জানান বাবা আর নেই। তাঁরা হাসপাতাল থেকে সৌমিত্রবাবুকে নিয়ে যাবেন তাঁদের গলফগ্রিনের বাড়িতে। সেখানে অল্প সময় কাটিয়ে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে টেকনিশিয়ানস স্টুডিওতে। সৌমিত্রবাবুর অন্যতম কর্মস্থলে।
তারপর সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে রবীন্দ্র সদনে। সেখানে ২ ঘণ্টায় শায়িত থাকবে দেহ। এখানেই সকলে সৌমিত্রবাবুকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারবেন।
তারপর বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ রবীন্দ্র সদন থেকে পায়ে হেঁটে সৌমিত্রবাবুর দেহ নিয়ে সকলে পৌঁছবেন কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। এখানেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্যসরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন তাঁর বাবার যে সম্মান প্রাপ্য ছিল তার চেয়েও বেশি সম্মান দিয়েছে সরকার। সবসময় খবর নিয়েছে। বেলভিউয়ের চিকিৎসকদেরও হার না মানা লড়াইয়ের জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন সৌমিত্রবাবুর প্রয়াণ বাংলা চলচ্চিত্র জগতের এক বড় ক্ষতি। তাঁর সঙ্গে সৌমিত্রবাবুর শেষবারের মত কথা হয়েছিল যখন সৌমিত্রবাবু করোনা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি। মেদিনীপুরে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে থেকে ফোনে সৌমিত্রবাবুর সঙ্গে কথা হয়।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, সেদিন সৌমিত্রবাবুর গলা শুনে তাঁর ভাল লেগেছিল। মানসিকভাবে শক্ত ছিলেন সৌমিত্রবাবু। মুখ্যমন্ত্রী জানান রাজ্যসরকারের তরফে যথাযথ সম্মানের সঙ্গেই সৌমিত্রবাবুর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
সৌমিত্রবাবুর মৃত্যু একটা যুগের অবসান ঘটাল। ক্ষিতদা কিন্তু জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ফাইট করে গেছেন। শুধু পর্দায় যে ফাইট তিনি করার অনুপ্রেরণা দিতেন তা নয়, তিনি নিজেও তা বিশ্বাস করতেন।
ব্যায়াম ও শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবন কাটানো সুঠাম মানুষটি গত বছরও নিউমোনিয়াকে হারিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। এবার আর ফেরা হল না। ৪০ দিনের কঠিন লড়াই শেষ হল মৃত্যুতে। তবে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়দের মৃত্যু হয়না। তাঁরা চিরকাল বেঁচে থাকেন তাঁদের কাজের মধ্যে দিয়ে।