এ ট্রেন যাত্রী তোলে কিন্তু একটুও এগোয় না, ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে ব্রিজের ওপর
এ এমন এক ট্রেন যা যাত্রী তোলে ঠিকই, কিন্তু ট্রেনের চাকা গড়ায় না। যাত্রীদের নিয়ে কোথাও যায়না। বরং ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে ব্রিজের ওপর।
এমন ট্রেনে কি কেউ উঠতে চাইবেন যে ট্রেন যাত্রী তোলে ঠিকই, কিন্তু এক পাও নড়ে না। বরং একটা ব্রিজের ওপর ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে দিনের পর দিন!
কেউ কখনও এমন ট্রেনের কথা শুনেছেন! এমন ট্রেন কিন্তু রয়েছে। একটি নদী, জঙ্গলের ওপর একটি ব্রিজ। তার ওপর দাঁড়িয়ে আছে একটি আস্ত ট্রেন। যাতে যাত্রী রয়েছে ঠিকই, কিন্তু ট্রেন এতটুকুও নড়ছে না।
ট্রেনের জানালা দিয়ে অবশ্য মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকা যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অনন্ত সবুজ বনানী দিগন্ত রেখা পর্যন্ত বিস্তৃত। যতদূর চোখ যায় শুধু সবুজ আর সবুজ।
সেই অপার সবুজের বুক চিরে চলে গেছে ছোট বড় নদী। আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে কত নাম না জানা পাখি। ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেন থেকে নিচের দিকে তাকালে কখনও নজর কাড়ে জল খেতে আসা ভাল্লুক, কখনও হরিণের পিছনে ছুটতে থাকা লেপার্ড।
আরও কত প্রাণি বনের মধ্যে নিজের মত করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। লাফাচ্ছে, ছুটছে, শিকার করছে, আলস সময় কাটাচ্ছে। সব মিলিয়ে বন্যেরা বনে যে সত্যিই কতটা সুন্দর তা দুচোখ ভরে উপভোগ করার জন্য এ ট্রেনের জানালা সবসময় উন্মুক্ত।
এমন একটি ট্রেন ঠায় যাত্রীদের নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রুগার জাতীয় উদ্যানের মাঝে একটি পরিত্যক্ত ব্রিজের ওপর। যে ট্রেন নড়েও না চড়েও না।
আসলে বাইরে থেকে ট্রেন ঠিকই, তবে এটি আদপে একটি বিলাসবহুল হোটেল। যা ওই পরিত্যক্ত ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে জঙ্গলকে প্রাণভরে উপভোগ করানোর জন্য। দিগন্তে ভোরের সূর্যের উঁকি দেওয়া দেখানোর জন্য। ডুবতে থাকা সূর্যের গোলাপি আভায় মানুষের দৃষ্টি স্থির করে দেওয়ার জন্য।
এই বুটিক হোটেলে থাকতে আসা মানুষজন প্রাণভরে উপভোগ করেন দক্ষিণ আফ্রিকার জঙ্গল জীবনের রাত দিন। এছাড়া হোটেলে সবরকম সুবিধা রয়েছে। রয়েছে ব্রিজের ধারে একটি গোল সুইমিং পুলও।
বিকেলে এখানে একটি চায়ের আড্ডাও বসে। সবমিলিয়ে এক স্বপ্ন পূরণের হাতছানি নিয়ে ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে হোটেল ট্রেন ক্রুগার শালাতি।