মধ্যযুগীয় বঙ্গে সমাজ সংস্কারক হিসাবে যে নামটি সামনে আসে তিনি চৈতন্য মহাপ্রভু। শ্রীচৈতন্যের বাংলা ও ওড়িশায় সমাজ সংস্কারের বিভিন্ন অধ্যায় নিয়ে মানুষ পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছেন ঠিকই, তবে তা ছিল একান্তই পড়াশোনার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তার সঙ্গে আমজনতার বড় একটা যোগ ছিলনা। অনেক আগে একটি বাংলা সিরিয়ালে চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনের কিছুটা অংশ সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা হয়। তাহলে সাধারণ মানুষ শ্রীচৈতন্যের বাল্যকাল থেকে কর্মজীবনের কথা জানবেন কীভাবে? সত্যিই সে উপায় বড় একটা ছিলনা। এবার সেই সুযোগ পেতে চলেছেন আমজনতা। শহর কলকাতায় উদ্বোধন হতে চলেছে শ্রীচৈতন্যের ওপর প্রথম মিউজিয়াম। বাগবাজার গৌড়ীয় মঠে তৈরি হয়েছে এই অত্যাধুনিক মিউজিয়ামটি। আগামী ১৩ অগাস্ট মিউজিয়ামের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী থাকছে এই মিউজিয়ামে? শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু মিউজিয়াম নামে এই মিউজিয়ামটির ৩ তলা বিশাল বাড়িটি তৈরি হয়েছে ১ হাজার ৩৫০ বর্গমিটার এলাকা নিয়ে। এখানে থাকছে মডেল দিয়ে শ্রীচৈতন্যের জন্ম থেকে বিষ্ণুপ্রিয়ার সঙ্গে বিয়ে থেকে সন্ন্যাস গ্রহণ ও সমাজ সংস্কারের কর্মকাণ্ড, সবকিছুই। ৩ডি অ্যানিমেশন, লাইট এন্ড সাউন্ড, মাল্টিমিডিয়া ডিসপ্লে। তাঁর নগর সংকীর্তনকে তুলে ধরা হবে ভার্চুয়াল রিয়্যালিটির মধ্যে দিয়ে। এছাড়া থাকছে বিশাল লাইব্রেরিতে প্রচুর বই, নথি। যা গবেষকদের কাজে লাগবে।
১২ থেকে ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি মিউজিয়ামের প্রধান ভক্তিনিষ্ঠ মধুসূদন মহারাজ সংবাদসংস্থা আইএএনএস-কে বলেন, প্রধানত বৈষ্ণব চিন্তাধারাকে ধরে রাখা ও শ্রীচৈতন্যের কথা তুলে ধরা তাঁদের এই অত্যাধুনিক মিউজিয়ামের উদ্দেশ্য। মিউজিয়ামে অডিটোরিয়াম, ধ্যান করার জায়গাও থাকছে। থাকছে শ্রীচৈতন্যকে জানার, চেনার সুযোগ। কারণ মানুষ সহজে বুঝতে পারেন এমন আধুনিক মাধ্যমকে এখানে শ্রীচৈতন্যকে বোঝানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে।
২০১৩ থেকে এই মিউজিয়াম তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। বাগবাজারে তৈরি এই মিউজিয়াম সারা বিশ্বে শ্রীচৈতন্যের ওপর প্রথম মিউজিয়াম হিসাবে সামনে এল। ফলে শুধু দেশ নয়, বিদেশিদেরও অন্যতম গন্তব্য হতে চলেছে এই অত্যাধুনিক মিউজিয়ামটি। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা