সেনা যখন বাড়িটা ঘিরে ফেলে তখনই বোধহয় ভিতরে থাকা জঙ্গিরা টের পেয়েছিল তাদের আর পালানোর পথ নেই। তবে হালও ছাড়েনি তারা। সেনার সঙ্গে গুলির লড়াই চালিয়ে যায়। বাড়ির ভিতর থেকে সেনাকে লক্ষ্য করে ছুটে আসতে থাকে গুলি। পাল্টা সেনাও গুলি চালায়। শুরু হয় প্রবল গুলির লড়াই। শ্রীলঙ্কার কালমুনাই শহরে একটি বাড়ি ঘিরে এই গুলির লড়াইকে কেন্দ্র করে গোটা শহরেই আতঙ্ক ছড়ায়। তবে গত শুক্রবার সন্ধে থেকেই এই শহরে কার্ফু জারি থাকায় রাস্তায় তেমন কেউ ছিলেন না।
শনিবার গুলির লড়াই দীর্ঘক্ষণ চলার পর আচমকাই ভিতর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ পায় সেনা। তারপরই সেনা ভিতরে প্রবেশ করার চেষ্টা করে। বাড়িটির বাইরে থেকে ৪টি দেহ উদ্ধার করে সেনা। বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে তারা আরও দেহ পায়। সেখানে পড়েছিল ৩ জন পুরুষ, ৩ জন মহিলা ও ৬টি শিশুর দেহ। সেনার অনুমান বেগতিক বুঝে বাড়ির মধ্যে লুকিয়ে থাকা মানববোমা নিজেদের গায়ে বাঁধা বিস্ফোরক ফাটিয়ে দেয়। বাড়িটির বাইরের দিকে যে ৪টি দেহ উদ্ধার হয় সেগুলির মধ্যে ৩টি মানববোমা বলেই মনে করছে সেনা। অন্যটি একজন সাধারণ মানুষের বলে জানিয়েছে সেনা।
এই ঘটনার পর ওই এলাকায় আর কোথাও কোনও জঙ্গি গা ঢাকা দিয়ে আছে কিনা তার জানতে তন্নতন্ন করে তল্লাশি শুরু করে শ্রীলঙ্কা সেনা। আশপাশের এলাকাগুলিতেও চিরুনি তল্লাশি চালানো হয়। এর আগে শ্রীলঙ্কা সেনা আমপারা জেলাতে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আইএস-এর একটি পতাকা পায়। পায় বেশ কিছু কাগজপত্র। যা ওই সংগঠনেরই। সেনা মনে করছে ওই জায়গাটি আসলে আইএস ব্যবহার করত তাদের সদস্যদের শপথবাক্য পাঠ করানোর জন্য।
গত রবিবার সকালে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে শ্রীলঙ্কা। মৃত্যু হয় ২৫৩ জন মানুষের। প্রথমে যদিও সংখ্যাটা ৩০০-র ওপর বলেই ঘোষণা হয়েছিল। তবে পরে সঠিক হিসাব প্রকাশ করে শ্রীলঙ্কা সরকার। সেই ঘটনার পর বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন আইএস। এদিকে এই ঘটনার পরই শ্রীলঙ্কা জুড়ে শুরু হয় তল্লাশি। ধারাবাহিক বিস্ফোরণে যুক্ত সন্দেহে ৮০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা