বিভিন্ন সময়ে বিজ্ঞানের জগতে মহাতারকার উজ্জ্বল উপস্থিতি মানবসভ্যতাকে আজ এতটা আধুনিক রূপ দিয়েছে। বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের অনেক রহস্য উন্মোচিত হয়েছে তাঁদের বুদ্ধিবলে। সেই গুটিকয়েক মহাতারকার মধ্যে যাঁকে জীবিত অবস্থায় মানুষ এতদিন দেখতে পাচ্ছিলেন তিনি স্টিফেন হকিং। অবশেষে সেই বিরল প্রতিভার জীবনাবসান হল। পৃথিবী ছেড়ে এই অতিবিরল প্রতিভা হারিয়ে গেলেন তারাদের ভিড়ে। ক’দিন আগে এই মানুষটাই হুইল চেয়ারে বসে পৃথিবীকে সতর্ক করে গেছেন এ বিশ্ব ছেড়ে পালাও। যদি মানবসভ্যতাকে টেকাতে চাও তো পাড়ি দাও চাঁদ অথবা মঙ্গল অথবা অন্য কোথাও। পৃথিবী আর বড়জোর মেরে কেটে একশো বছর। তারপর তার ধ্বংস অনিবার্য। অন্তত এমনই সতর্কবার্তা শুনিয়েছিলেন তিনি। সেটাই ছিল তাঁর পৃথিবীবাসীর জন্য শেষ পরামর্শ।
কেমব্রিজে তাঁর পরিবারের তরফ থেকে এদিন তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। তাঁর ৩ সন্তান লুসি, রবার্ট ও টিম। এঁরাই পিতার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করেন। স্টিফেন হকিং সাধারণ মানুষ নন, তিনি মহামানব। তাই এই মৃত্যু হয়তো জাগতিক। কিন্তু তিনি বেঁচে থাকবেন আরও বহু বছর। যতদিন পৃথিবী থাকবে, মানবসভ্যতা থাকবে, ততদিন মানুষের মনে বেঁচে থাকবেন স্টিফেন হকিং। এমনই মনে করেন পৃথিবীর তাবড় বিজ্ঞানীরা। যাঁরা আজ স্টিফেন হকিংয়ের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকেই শোকাতুর। অনেকেই হারিয়েছেন প্রতিক্রিয়ার ভাষা।
১৯৬৩ সালে মাত্র ২১ বছর বয়সে স্টিফেন হকিং মোটর নিউরোন রোগে আক্রান্ত হন। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছিলেন আর খুব বেশি হলে বছর ২। তারপর আর স্টিফেনের বাঁচার কোনও আশা নেই। কিন্তু পরে দেখা যায় তাঁর ক্ষেত্রে অসুখটি খুব ধীরে ছড়াচ্ছে। ফলে তারপর পঞ্চান্ন বছর বাঁচলেন হকিং। পৃথিবীকে দিয়ে গেলেন তাঁর অতিমানবিক মেধার সাক্ষর। মানবসভ্যতার ইতিহাসে তাঁর দান চিরদিন অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।