১৯৪৫ সালে হারিয়ে যান নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু। তারপর থেকে তাঁর আর খোঁজ মেলেনি। ফলে তাঁকে নিয়ে শুরু হয় নানা জল্পনা। যা দীর্ঘদিন পর্যন্ত চালু ছিল। কখনও জাপানে বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যুর কথা বলা হয়, তো কখনও বলা হয় উত্তরপ্রদেশে এক সাধুর বেশে হাজির হন নেতাজি। সেই গুমনামিবাবাই হলেন নেতাজি। সেই গুমনামিবাবা-র চরিত্র নিয়েই পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় তৈরি করেছেন একটি সিনেমা। নাম গুমনামি। ১৫ অগাস্ট সেই সিনেমার প্রথম টিজারটি আত্মপ্রকাশ করল। আর আত্মপ্রকাশেই বিতর্কের মুখে পড়ল সিনেমাটি। আইনি নোটিস গেল সৃজিতের কাছে।
বেলগাছিয়ার বাসিন্দা দেবব্রত রায় একজন নেতাজি ভক্ত। তিনি ওই টিজার দেখার পর আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন সৃজিতের বিরুদ্ধে। দেবব্রতবাবুর দাবি, টিজারেই ভুল তথ্য পরিবেশন করেছেন সৃজিত। যা নেতাজি সম্বন্ধে ভুল বার্তা দেবে। তাঁর দাবি, সিনেমায় গুমনামিবাবাকে এমনভাবে তুলে ধরা হয়েছে যেন তিনিই ছিলেন নেতাজি। অর্থাৎ এতদিনের বিতর্কের কার্যত অবসান ঘটিয়ে সৃজিত এটাই তুলে ধারার চেষ্টা করেছেন যে গুমনামিবাবাই ছিলেন নেতাজি। যা আদ্যন্ত ভ্রান্ত, কল্পনাপ্রসূত, ভণ্ডামি বলে ব্যাখ্যা করেছেন ক্ষুব্ধ দেবব্রতবাবু।
দেবব্রতবাবুর দাবি, নেতাজি অন্তর্ধান রহস্য উন্মোচন করতে যে বিচারপতি মনোজ মুখোপাধ্যায় কমিশন গঠন করা হয়েছিল সেই কমিশনের রিপোর্টেও বলা হয় নেতাজির সঙ্গে গুমনামিবাবার কোনও মিল ছিলনা। তিনি আরও বলেন, নেতাজির মত মানুষ ওভাবে একজন সাধু সেজে এতদিন উত্তরপ্রদেশে রইলেন আর তাঁকে কেউ চিনতে পারল না, এটা মেনে নেওয়া যায়না। এভাবে গুমনামিবাবাকে একদম নেতাজি বলে প্রমাণ করার চেষ্টা আসলে দেশের মানুষকে ঠকানো বলে দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ দেবব্রতবাবু।
এদিকে গুমনামি সিনেমার টিজার প্রকাশ করেই প্রবল বিতর্কের মুখে পড়লেন সৃজিত। অবশ্য অনেকে মনে করছেন এতে সৃজিতের ভালই হল। সিনেমা যত বিতর্কে জড়াবে ততই তো লাভ! যত সিনেমা নিয়ে চর্চা হবে। লেখালিখি হবে ততই তার নাম মানুষের মুখে মুখে ঘুরবে। সেটাও তো এক ধরণের বিজ্ঞাপন। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা