সিনেমার কৃপায় এখন ভারতের প্যাডম্যান অনেকের কাছেই পরিচিত হয়ে গেছেন। তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুরের ছেলে অরুণাচলম মুরুগানান্থম দেশের মহিলাদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে তাঁদের হাতে সস্তায় স্যানিটারি প্যাড তুলে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। আর তাতে একদিন সফলও হন তিনি। তাঁর সেই স্বপ্নপূরণের কাহিনি নিয়েই তৈরি হয়েছে হিন্দি সিনেমা প্যাডম্যান। যা দেখার পর অনেকেই তাঁর লড়াইয়ের কথা জানতে পেরেছেন।
সেই অরুণাচলমের লড়াই ছিল এক পুরুষের লড়াই। এবার একই স্বপ্ন বুকে করে রজঃস্বলা মহিলাদের জন্য সস্তায় স্যানিটারি প্যাড তৈরির লড়াই চালাচ্ছেন এক মহিলা বিজ্ঞানী। ইতিমধ্যেই তিনি অনেকের কাছে প্যাড ওম্যান নামে খ্যাত হয়েছেন।
ভারতের অন্যতম ধান উৎপাদক রাজ্য ছত্তিসগড়। ধান ঝাড়ার পর পড়ে থাকে খড়। পঞ্জাব, হরিয়ানায় এই খড় বা ফসল কাটার পর তার ফেলে দেওয়া অংশকে পুড়িয়ে দেওয়ার রীতি আছে। যা থেকেই দিল্লি সহ বিভিন্ন জায়গায় দূষণ ছড়াচ্ছে মারাত্মকভাবে। ফলে তার বিকল্প পথের খোঁজ চলছে।
ছত্তিসগড়ের ধামতাড়ি জেলার বিজ্ঞানী সুমিতা পঞ্জওয়ানি ছত্তিসগড়ে পড়ে থাকা খড়কে কাজে লাগাতে চান অন্যভাবে। তাঁর গবেষণা সফলের মুখে। তিনি এই খড়কেই ব্যবহার করে বানাচ্ছেন মহিলাদের জন্য সস্তার স্যানিটারি প্যাড।
৩ বছর ধরে এই পরীক্ষা চালাচ্ছেন সুমিতা। ইতিমধ্যেই তাঁর পরীক্ষা সফল হয়েছে। এখন কেবল ন্যাপকিনগুলোকে সঠিক আকার দেওয়ার কাজ চলছে। সে কাজে সুমিতাকে সাহায্য করছে রায়পুরের ইন্দিরা গান্ধী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁর এই পরীক্ষা শুধু লক্ষ লক্ষ মহিলাদের হাতে সস্তায় ন্যাপকিন তুলেই দেবেনা, সেইসঙ্গে দূষণ নিয়ন্ত্রণেও বড় ভূমিকা নেবে।
এই মুহুর্তে বাজার চলতি ন্যাপকিন সব মানুষের পক্ষে কিনে ওঠার মত অবস্থায় নেই। তার দাম যথেষ্ট। কিন্তু সুমিতা যে ন্যাপকিন বানাচ্ছেন তার দাম খুব বেশি হলে ২ থেকে ৩ টাকা পড়বে। যা অনেকের পক্ষেই ব্যয় করা সম্ভব। এটি একবারই ব্যবহার করা যাবে।
সুমিতা জানিয়েছেন ব্যবহারের পর মাঠে ফেলে দিলেও সমস্যা নেই। গোবর যেমন মাটিতে মিশে যায়, তেমনই এই খড় থেকে তৈরি ন্যাপকিনও মাটিতে মিশে যাবে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা