ব্রিটিশ আমলে আইন করে ভারতে সমকামিতাকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছিল। অপরাধের তকমা পেয়েছিল সমকামিতা। সমলিঙ্গে যৌনতার প্রমাণ মিললে যাবজ্জীবন পর্যন্ত জেল হাজতের সংস্থান ছিল আইনে। এদিন পিনাল কোডের সেই ৩৭৭ ধারাকে অনেকাংশেই বাতিল করে দেশে সমকামিতাকে বৈধতা দিল সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এদিন পরিস্কার করে দিয়েছে, ভারতে সমকামিতা কোনও অপরাধ নয়। কোনও মানসিক সমস্যাও নয়। বরং ২টি মানুষ যদি নিজেদের স্বদিচ্ছায় একে অপরের সঙ্গে যৌন সঙ্গম করেন তাহলে তা অপরাধ একেবারেই নয়। যৌন প্রবণতার ভিত্তিতে কোনও ভেদাভেদ দেশের মৌলিক অধিকারকে বিনষ্ট করতে পারেনা। সামাজিক নীতি ব্যাখ্যা কখনই সংবিধান স্বীকৃত মৌলিক অধিকার কেড়ে নিতে পারেনা। সামাজিক নীতি কখনই সাংবিধানিক নৈতিকতাকে হত্যা করতে পারেনা।
শীর্ষ আদালতের রায়ে কার্যতই খুশির হাওয়া বইছে দেশের এলজিবিটি মানুষজনের মধ্যে। এদিন ৩৭৭-এর সিংহভাগ বাতিলের পর দেশের বহু স্বনামধন্য মানুষ ট্যুইট করে এই রায়কে স্বাগত জানান। এর মধ্যে দিয়ে আগামী দিনে ভালবাসার ভেদাভেদ বন্ধ হল বলে মত প্রকাশ করেন তাঁরা। তাঁদের মতে, সমকামিতার পক্ষে রায় দেশে সমতা প্রতিষ্ঠা করল। মানুষের ব্যক্তিগত ইচ্ছাকে সম্মান দিল। ভালবাসার জয় হল।
এদিনের রায় ঘোষণার পর বহু সমকামী মানুষ রামধনু রংয়ের পতাকা নিয়ে, মুখে রামধনু রংয়ে সেজে রাস্তায় বার হন। মিছিল করে নিজের খুশির বহিঃপ্রকাশ করেন। বিশ্বের বহু দেশেই সমকামিতাকে আইন করে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। ভারতও এদিন থেকে সেই তালিকায় যুক্ত হল। সেদিক থেকে ভারতীয় ইতিহাসের এক উজ্জ্বল দিন হয়ে রইল ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮।