ব্রিটিশ আমলে তৈরি হয়েছিল আইন। ১৫৮ বছর ধরে সেই আইনই বলবত ছিল এই দেশে। ইন্ডিয়ান পিনাল কোডের সেই ৪৯৭ ধারাকে অবশেষে অসাংবিধানিক আখ্যা দিল সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এদিন পরিস্কার করে দেন পরকীয়ার ফলে সংসার ভাঙতে পারে একথা ঠিক, কিন্তু পরকীয়া কোনও অপরাধ নয়। ভারতে পুরুষের যতটা অধিকার, নারীরও ততটাই অধিকার। স্ত্রী কখনই স্বামীর সম্পত্তি নয়। নারীরও ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্য আছে। সেও পুরুষের মতই সমানভাবে পছন্দ করতে পারে।
কিন্তু কী ছিল ৪৯৭ ধারায়? ৪৯৭ ধারা অনুযায়ী একজন নারী দোষী না হলেও একজন পুরুষ পরকীয়া করলে তাঁর ৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের সম্ভাবনা ছিল। সঙ্গে ছিল জরিমানার সম্ভাবনা। তা অপরাধ হিসাবে গণ্য হত। অর্থাৎ একজন বিবাহিতা নারী যদি স্বামী ছাড়া অন্য পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতেন তবে তা ওই পুরুষের জন্য অপরাধ হিসাবে গণ্য হত ৪৯৭ ধারাতে। এখানেই স্ত্রীদের স্বামীর সম্পত্তি ভাবার তত্ত্ব নিহিত রয়েছে বলে মনে করছে সুপ্রিম কোর্ট। স্ত্রী তো স্বামীর সম্পত্তি। তাই তাঁর সঙ্গে স্বামীর অমতে যে পুরুষ যৌন সম্পর্ক স্থাপন করবেন তাঁকে শাস্তি পেতে হবে।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, বিশ্বের প্রায় সব দেশেই ব্যভিচারকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে চিহ্নিতকরণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কাউকে ব্যভিচারের অভিযোগে শাস্তি দেওয়া মানে কোনও এক অখুশি মানুষকে শাস্তি দেওয়া। ৪৯৭ নারীকে তার পছন্দের অধিকার থেকে বঞ্চিত করছিল বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।