দক্ষিণ কেরালার পশ্চিমঘাট পর্বতমালার ওপর অবস্থিত ৮০০ বছরের পুরনো মন্দির সবরিমালা। দেবতা আয়াপ্পাকে দর্শন করতে কঠিন পাহাড়ি জঙ্গলময় পথ অতিক্রম করে ভক্তরা পৌঁছন পাহাড়ের ওপর সবরিমালা মন্দিরে। এতদিন সেই মন্দিরে প্রবেশাধিকার ছিলনা ১০ থেকে ৫০ বছরের নারীর। যুক্তি ছিল ওই বয়সকালে নারী ঋতুমতী থাকেন। আর ঋতুমতী নারী ‘অশুদ্ধ’। তাই তাঁদের এই মন্দিরে প্রবেশাধিকার নেই। মন্দির থেকে ৫ কিলোমিটার আগেই তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। সেখান থেকে বয়স বুঝে বা বয়সের প্রমাণপত্র দেখে অন্য বয়সের মহিলাদের অর্থাৎ ১০-এর কম বা ৫০-এর বেশি বয়সের মহিলাদের মন্দিরে যেতে দেওয়া হত।
এই রীতির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। সেই মামলার এদিন রায় শোনাল সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ এদিন এক ঐতিহাসিক রায় দেয়। রায়ে শীর্ষ আদালত সব বয়সের মহিলাদেরই মন্দিরে প্রবেশের অধিকার সুনিশ্চিত করেছে। আদালত সাফ জানিয়েছে নিছক শরীরবৃত্তীয় কারণকে সামনে রেখে কাউকে পুজো থেকে বিরত রাখা যেতে পারেনা। এটা পুরুষতান্ত্রিকতার নিদর্শন। আদালত দেশের সংবিধান স্বীকৃত সমতার অধিকারের মত মৌলিক অধিকারকে পারম্পরিক নিষেধাজ্ঞারা ওপরে স্থান দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে পুরুষ হোক বা মহিলা, সকলেরই সমানাধিকার।
১০ থেকে ৫০ বছরের মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা সেখানকার ধর্মীয় বিশ্বাসের অঙ্গ হিসাবে যে সওয়াল করা হয়েছিল তা নস্যাৎ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ৪-১ ব্যবধানে বিচারপতিদের সম্মতিতে সব বয়সের মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশ এদিন সুনিশ্চিত হয়। একমাত্র বিচারপতি ইন্দু মালহোত্রা বিপক্ষে রায় দেন।