ঐতিহাসিক অযোধ্যা মামলার রায় গেল রামলালা-র পক্ষে। বিতর্কিত জমিতে রাম মন্দির হবে। কেন্দ্রীয় সরকার একটি ট্রাস্ট গঠন করবে। তার তত্ত্বাবধানে রাম মন্দির গঠিত হবে। ৩ মাসের মধ্যে ট্রাস্ট গঠন করতে হবে। এদিন রায়ে একথা জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর নেতৃত্বে ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে রায় দানের ক্ষেত্রে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া-র দেওয়া তথ্যকে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় ৩ পক্ষ ছিল। রামলালা, নির্মোহি আখড়া ও সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড। তারমধ্যে জমি পেল রামলালা। মামলা জিতল তারাই।
শনিবার সুপ্রিম কোর্টে সকাল সাড়ে ১০টায় রায় দানের কথা ছিল। সেইমত ঠিক সাড়ে ১০টাতেই রায় পড়া শুরু করেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। তিনি জানান, ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের সর্বসম্মতিক্রমেই এই রায় দান হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে এএসআই তাদের যে তথ্য দিয়েছে তাতে বাবরি মসজিদ কোনও মন্দির ভেঙেই তৈরি হয়েছিল কিনা জানা নেই, তবে যেখানে তৈরি হয়েছিল সেই জমির তলায় অন্য স্থাপত্য ছিল। সেই স্থাপত্য কোনও হিন্দু মন্দিরেরই ছিল কিনা তা সঠিক করে এএসআই বলেনি। তবে মসজিদ কোনও খালি জমিতে তৈরি হয়নি। আগে সেখানে অন্য স্থাপত্য ছিল। সেই কাঠামো মুসলিম স্থাপত্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। অন্যদিকে হিন্দুদের যে বিশ্বাস রয়েছে যে রামচন্দ্রের জন্ম হয়েছিল অযোধ্যায় তার বিরোধিতা কেউ করেননি। ওই জমি যে তাদের ছিল তার প্রমাণও সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড দিতে পারেনি। অন্যদিকে নির্মোহি আখড়ার দাবিও এদিন খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। আদালত জানিয়েছে তাদের কোনও দাবি ওই জমির ওপর নেই। জমির ওপর সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডেরও দাবি নেই। তবে সুপ্রিম কোর্ট এদিন নির্দেশ দিয়েছে যে অযোধ্যাতেই একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে ৫ একর জমি দিতে হবে। যেখানে তারা মসজিদ গঠন করবে।
শনিবারের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে দীর্ঘদিনের এক বিতর্কের অবসান হল। অযোধ্যা মামলায় আগে এলাহাবাদ হাইকোর্ট ৩ পক্ষের মধ্যে বিতর্কিত ২.৭৭ একর জমি সমানভাগে ভাগ করে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে ৩ পক্ষই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার শুনানিতে না গিয়ে ৩ পক্ষকে একসঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসে মীমাংসার রাস্তায় হাঁটতে বলেন। সেইমত আলোচনার টেবিলে বসে ৩ পক্ষ। কিন্তু সেই বৈঠকও নিষ্ফলা হয়। তারপরই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় এই মামলার রায় তারা একটানা শুনানির পর দেবে। ৪০ দিন ধরে টানা সুপ্রিম কোর্টে শুনানি হয়। তারপর প্রধান বিচারপতি জানিয়ে দেন এই মামলার রায় আগামী ১৭ নভেম্বরের মধ্যে দেওয়া হবে। তবে রায় দেওয়া হল তার অনেক আগেই। ৯ নভেম্বরই পরিস্কার হয়ে গেল বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এই বিতর্কিত জমি কার নিয়ন্ত্রণে থাকছে। — সংবাদ সংস্থার সাহায্য নিয়ে লেখা